ঈদের ছুটি শেষে শরীয়তপুরের সাত্তার মাদবর ও মঙ্গলমাঝির ফেরিঘাটে ঢাকামুখী মানুষ এবং যানবাহনের চাপ বেড়েই চলছে। ফেরি সংকট থাকায় এ চাপ আরও তীব্র হচ্ছে। ফেরিতে মানুষ ও মোটরসাইকেল সহজে উঠতে পারলেও ব্যক্তিগত গাড়িকে ছয় থেকে আট ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্রে জানা গেছে, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ায় শুক্রবার (৬ মে) থেকে ঢাকামুখী যাত্রীরা কর্মস্থলে যোগ দিতে গন্তব্যে ছুটছেন। তবে শনিবার (৭ মে) সকাল থেকে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরিতে মানুষের চাপ বেড়েছে। মানুষ ও যানবাহনের চাপ সামলাতে মঙ্গলমাঝির ও সাত্তার মাদবর ঘাট থেকে শিমুলিয়া নৌরুটে চারটি ফেরি, ২০টি লঞ্চ ও ২৩টি স্পিডবোট চলাচল করছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভোর থেকে ঢাকামুখী মানুষের চাপ বেশি থাকায় সাত্তার মাদবর ও মঙ্গলমাঝির ঘাটের টার্মিনাল এবং সংযোগ সড়কে অন্তত পাঁচ শতাধিক যানবাহন আটকা পড়েছে।
ঢাকামুখী মাইক্রোবাসচালক আজাদ হোসেন আলিম বলেন, আমি খুলনা থেকে এসেছি, ঢাকা যাবো। বেলা ১১টায় ঘাটে সিরিয়াল দিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত একভাবে দাঁড়িয়ে আছি। ফেরি আসামাত্রই যাত্রী ও মোটরসাইকেলে ভরে যাচ্ছে। আমাদের গাড়ির আর জায়গা হচ্ছে না। তার ওপর ভিআইপি গাড়ির যন্ত্রণা তো আছেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই।
মোটরসাইকেল নিয়ে ঘাটে অপেক্ষা করছেন নড়াইলের সদর থেকে আসা মো. আশিক। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে মোটরসাইকেল নিয়ে গিয়েছিলাম। ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছি মোটরসাইকেলে। ঘাটে দুই ঘণ্টা যাবত অপেক্ষা করছি। গরমে কষ্ট হচ্ছে, কি আর করার। তবে মা-বাবার সঙ্গে ঈদ করে এখন ঢাকায় ফিরছি, এটাই আনন্দের।
সন্ধ্যায় পিরোজপুর থেকে আসা ঢাকামুখী মো. মামুন বলেন, মাইক্রোবাস ভাড়া করে পরিবার নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি। বেলা ১১টা থেকে ঘাটে অপেক্ষা করছি। আমরা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। কখন পৌঁছবো জানি না।
সাত্তার মাদবর ও মঙ্গলমাঝির ফেরিঘাটের শুল্ক আদায়কারী সাইদুর রহমান বলেন, দুই ফেরিঘাট থেকে শিমুলিয়া নৌরুটে চারটি ফেরিতে ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। শুক্রবারের তুলনায় আজ যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় বেশি। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।
সাইদুর রহমান আরও বলেন, ঘাটে ব্যক্তিগত গাড়ি আর মোটরসাইকেলের চাপ বেশি। ফেরিঘাটে আসামাত্রই ডেকে বেশিরভাগই মোটরসাইকেলে ভরে যায়। বড় ফেরিতে ১৫০ থেকে ২০০ ও ছোট ফেরিতে ৪০ থেকে ৫০টা মোটরসাইকেল ওঠে। মোটরসাইকেলের চাপ বেশি থাকায় ব্যক্তিগত গাড়িকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
সাত্তার মাদবর ও মঙ্গলমাঝির ঘাটে দায়িত্বরত শরীয়তপুরের ট্রাফিক সার্জেন্ট কল্লোল কুমার ভট্টাচার্য বলেন, সকাল থেকে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরিতে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। ঘাটে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।