গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। দেখা যায়, অনেকেই ব্যক্তিগত যানবাহন, মোটরসাইকেল ও খোলা ট্রাকের ছাদে ও পিক-আপে করে জীবন ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
ট্রাক চালক সোলায়মান বলেন, আজ শনিবার সকালে টাঙ্গাইলের সল্লা এলাকাতে এসে পৌঁছেছি। বঙ্গবন্ধু সেতু যেতে যে কতক্ষণ লাগবে বলতে পারছি না। খাওয়া দাওয়া নাই, অনেক কষ্ট হচ্ছে।
বাস যাত্রী হবিবর রহমান বলেন, সকাল ৬ টায় গাজীপুর থেকে রওনা দিয়েছি এলেঙ্গায় পৌঁছেছি ৩ ঘণ্টায়। সল্লা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু যেতে যে কতক্ষণ সময় লাগবে জানি না। আমাদের ভোগান্তির শেষ নাই।
পুলিশ ও সেতু কর্তপক্ষ জানায়, ভোর রাতে সেতুর উপর যানজটের চাপ বেড়ে যায়। অন্যদিকে কয়েকটি গাড়ি বিকল হয়ে যায়। পরে বিকল হওয়া যানবাহনগুলো সরিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগে যার ফলে অতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়।
এছাড়াও সেতুর উপর দুর্ঘটনা রোধ ও সেতুর ধারণ ক্ষমতার অধিক যানবাহন প্রবেশ করায় টোল বুথের সামনে গাড়ির সারি চলে আসে।এ কারণে বেশ কয়েকবার টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়। এতে সেতুর পূর্ব থেকে কালিহাতী উপজেলার সল্লা পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনে কাজ করছে পুলিশ।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ওসি মীর সাজেদুর রহমান জানান, যানবাহনের চালকদের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজট নিরসনে মহাসড়কে পুলিশ কাজ করছে। দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক হবে। এদিকে মহাসড়কে যানজটের কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু ভূঞাপুর এলেঙ্গা আঞ্চলিক সড়ক হয়ে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ বেড়েছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত ও নির্বিঘ্নে করতে মহাসড়কে প্রায় ৮’ শ পুলিশ সদস্য নিরলস পরিশ্রম করছেন। গত কয়েকবছর এ মহাসড়ক দিয়ে ভোগান্তিমুক্ত ঈদ যাত্রা করেছে মানুষ।
উল্লেখ্য, দেশের দ্বিতীয় ঢাকা টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহের প্রায় ২৩ জেলার যানবাহন চলাচল করে। ঈদে অতিরিক্ত যান, দুর্ঘটনা কিংবা টোল প্লাজায় ধীরগতির কারণে অনেক সময় মহাসড়কে যানজট লাগে। এবার কখনো কখনো যানজট কিংবা ধীরগতি থাকলেও দীর্ঘ ভোগান্তি নেই।
স্বাভাবিকভাবে সেতু দিয়ে প্রতিদিন ১৮/১৯ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। ঈদে এর সংখ্যা দাঁড়ায় দুই থেকে তিনগুণ। গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ টোল আদায় হয়েছে।