এক কিলোমিটার মাটির রাস্তা। প্রতিদিন হাজারো মানুষের চলাচল রাস্তাটি দিয়ে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এটি চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
গ্রামবাসী কয়েক দফা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যর দ্বারস্থ হলেও কোনো কাজ হয়নি। একপর্যায়ে তাঁরা ঠিক করলেন, জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের ওপর আর ভরসা নয়, নিজেরাই চাঁদা তুলে রাস্তা মেরামত করবেন। সেইমতো রাস্তা সংস্কার করতে কাজে নেমে পড়েন গ্রামের বাসিন্দারাই।
ঘটনাটি বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বিলপাড়া খাদুলী গ্রামের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার গোপালপুর খাদুলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোবিন্দপুর পর্যন্ত চলে গেছে কাঁচা রাস্তাটি। স্থানীয়দের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি অবহেলার কারণে একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় লোকজন, বিশেষ করে শিশু ও নারীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভাঙা রাস্তার কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। তারা উৎপাদিত ফসল মাঠ থেকে নিয়ে ঘরে তুলতে পারছেন না। এই রাস্তা দিয়ে কোনো রোগী যাতায়াতেও সমস্যা হচ্ছে।
রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লেও কোনো জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসন খোঁজ নেন না। তাঁদের কাছে গ্রামবাসী গিয়ে বারবার ধরণা দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। তাই গ্রামবাসী প্রত্যেক বাড়ি থেকে চাঁদা তুলে রাস্তাটি মাটি ভরাট করে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেন। গত সোমবার (৩১ মে) থেকে ওই রাস্তার বিলপাড়া খাদুলী গ্রামের অংশে ৫০-৬০ জন মানুষ রাস্তা সংস্কারে কাজ করছেন। এই কাজ শেষ হতে আরো তিন চার দিন সময় লাগতে পারে।
রাস্তা সংস্কার কাজের উদ্যোক্তা আবু সুফিয়ান মিলন বলেন, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিসহ সবার কাছে অনেকবার রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছে। কিন্ত কেউ উদ্যোগ নেননি। তাই আমরাই উদ্যোগটা নিয়েছি। গ্রামের সবাই সাধ্যমতো চাঁদা দিয়ে প্রায় ১৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করে কাজ শুরু করা হয়েছে। টাকা দেওয়ার পর সবাই শারীরিক শ্রমও দিচ্ছেন। রাস্তাটি রক্ষার জন্য প্যালাসাইটিং প্রয়োজন। কিন্ত সেই সামর্থ্য আমাদের নেই।
ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুনর রশিদ সেলিম বলেন, ‘সীমিত বরাদ্দ থাকায় এই রাস্তাটির কাজ করানো যায়নি। তবে পরে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’