এম এ সাজেদুল ইসলাম: দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ ও পীরগঞ্জের জয়ন্তিপুর ঘাটের সেতু নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় বাঁশের লম্বা সাঁকোতে পারাপার হচ্ছে দুই উপজেলার শতশত নারী পুরুষ। তবে কতৃপক্ষ বলেছে, অল্প দিনের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ হলেই আলোর মুখ দেখবে সেতুটি। বর্তমানে জোরে সোরে কাজ শুরু করেছে নির্মানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবার পুরোদমে নির্মান কাজ শুরু হয়েছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীতে জয়ন্তীপুর ঘাটে নির্মানাধীন ব্রীজ।
সেতুটি নির্মান সম্পূর্ণ হলে রংপুর সহ নবাবগঞ্জ হয়ে হিলি স্থলবন্দর সহ জয়পুর হাটে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। দেশে করোনা দেখা দেওয়ায় যথাসময়ে সেতুটি নির্মান করে জনসাধারণের ব্যবহার করার সম্ভব হয়নি। তবে আবার কাজ শুরু হয়েছে বলে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন পীরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নুরুল ইসলাম।
রংপুরের পীরগঞ্জে জয়ন্তিপুর ঘাটে প্রধানমন্ত্রীর ২০১৩ সালের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন কাজ ২০১৯ সালের ২২ ফ্রেব্রুয়ারী পীরগঞ্জ আসনের এমপি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ব্রীজ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর করেন।
রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী টুকুরিয়া ইউনিয়নের গোপিনাথপুর সড়কের জয়ন্তিপুর ঘাটে করতোয়া নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ চলছে। পল্লী সড়কে গুরুত্বপুর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ ব্রীজটি নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে এ কাজের তদারকি করছেন। এতে ৩০ কোটি ৩১ লাখ ১৪ হাজার ৭৭০ টাকা চুক্তিমুল্যে ২৯ কোটি ৪৮ লাখ ৯৪ হাজার ২০৩ প্রাক্কলিক মুল্য ধরা হয়েছে।
চলতি বছরের প্রকৌশল প্রযুক্তি লিমিটেড (পিপিএল) কাশেম কনস্ট্রাকশন (কিউসি) জয়েন ভাইচার (জেভি) ৫২ সাত্তার ম্যানশন পঞ্চহালি চট্রগ্রাম ব্রীজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। উপজেলা প্রকৌশলি মজিবর রহমান জানান, জয়ন্তিপুর ঘাট-গোপিনাথপুর সড়কে ১৫০০ মিটার চেইনেজে জয়ন্তিপুর ঘাটে করতোয়া নদীর উপরে ২৯৪ মিটার দৈর্ঘ্য ৯.৮মিটার প্রস্থে ফুটপাতসহ এ ব্রীজের নিমার্ণ কাজ চলছে। এতে ৮০টি পাইল, ৭টি স্প্যান, ৬টি পিলার ও ২টি এবাটমেন্ট রয়েছে। এছাড়াও রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সীমানায় ৩৮৭ মিটার ও দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা সীমানায় ৪৫০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে।
দ্রুত ব্রীজটি নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৫৮টি পাইল, ৩টি পিলারের বেজ ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। টুকুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মন্ডল জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর তরফমৌজা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের জনসভায় জয়ন্তিপুর ঘাটে ব্রীজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়। এ সেতু নির্মানের ফলে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ, বিরামপুর ও রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার জনসাধারণের দীর্ঘদিনের দাবী পুরণসহ দুর্ভোগ-ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।
পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ব্যবসা বানিজ্যে উন্নতির প্রভাব পড়বে। এলাকার কৃষকদের কৃষিজাতপণ্য সহজে পরিবহনের ফলে নিকটতম হাট-কাজারে বিক্রিতে ন্যায্যমুল্য নিশ্চিত হবে।
নবাবগঞ্জ উপজেলার মজিদনগর কারিগরি স্কুলের সুপার মোঃ মিজানুর রহমান জানান, এ সেতু নির্মান হলে ওই পীরগঞ্জ-নবাবগঞ্জের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আত্বীয়তা ও ব্যবসায়িক কাজের পরস্পুরক হিসেবে ঘাট পারাপারে কস্ট লাঘব হবে এবং দুই উপজেলার যোগাযোগ উন্নয়ন হবে।