দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আগামী ১২ আগস্ট থেকে চালু হচ্ছে বগুড়া-জামালপুর নৌপথে ফেরি চলাচল। ফেরি চলাচলের খবরে দুই পাড়ের মানুষের মাঝে আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। নৌপথটি চালু হলে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকা পথের দূরত্ব কমবে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার। এতে কম সময়ে উত্তরাঞ্চলের মানুষ বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও রাজধানী ঢাকায় যেতে পারবেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের জুন মাসে বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পর প্রথমে যাত্রীবাহী ট্রেন ও পরে মালবাহী ওয়াগন পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে যমুনা নদী পাড়ের বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালীতলা ও মথুরাপাড়া নৌঘাট দিয়ে অপর পাড়ে জামালপুরের মাদারগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ ও কাজলাঘাট হয়ে মানুষের চলাচল রয়েছে। বর্তমানে এপথে নৌকায় প্রতিদিন হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি থেকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ নৌঘাটের দূরত্ব মাত্র ১৬ কিলোমিটার। বগুড়া থেকে সড়কপথে সিরাজগঞ্জ হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে টাঙ্গাইল জেলা হয়ে জামালপুর যেতে হয়। ফলে বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা জামালপুর, শেরপুর ও ময়মনসিংহ যেতে নানা ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও জামালপুরের মাদারগঞ্জ নৌপথে ফেরি চালুর জন্য ফেরিঘাট নির্মাণ, সড়ক যোগাযোগ স্থাপন, নাব্যতা ফেরাতে নদী খননসহ নদী সংস্কার ও উন্নয়নকাজে প্রকল্প প্রহণের প্রাক-সম্ভ্যবতা যাচাইয়ে একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল গত ২৬ মে সারিয়াকান্দি ও মাদারগঞ্জ এলাকা পরিদর্শন করেন। জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের (আইডব্লিউএম) দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল ফেরি চালুর সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাই করেছেন। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীতে ফেরিঘাট স্থাপন হলে উত্তরের মানুষের সাথে আবারো বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার যোগাযোগ স্থাপন হবে। প্রসার হবে কৃষি পণ্যের দ্রুত সরবরাহ, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার এবং সড়ক মহাসড়কে যানজট কমে আসবে।
ওই এলাকার সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান বলেন, প্রয়াত আব্দুল মান্নানের স্বপ্ন ছিল সারিয়াকান্দি মাদারগঞ্জ ফেরি সার্ভিস চালু করার। তিনি এ ব্যাপারে কাজও এগিয়ে নিয়েছিলেন। তার স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে। ফেরি সার্ভিস চালু হলে এ পথে যেমন ঢাকার সাথে যোগাযোগে দূরত্ব কমবে। সেই সাথে বৃহত্তর ময়মনসিংহের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।