কঠোর লকডাউনের ঘোষণায় শনিবার সকাল থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে উভয়মুখী যাত্রী চাপ শুরু হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে চাপ আরো বৃদ্ধি পায়। দূর পাল্লার বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীরা মোটরসাইকেল, থ্রি হুইলার, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন হালকা যানবাহনে ৩-৪ গুণ ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছান। এদিনও ঘাট এলাকা বা ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণই দেখা যায়নি।
জানা যায়, শনিবার সকাল থেকেই শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে যাত্রীদের চাপ শুরু হয়। লঞ্চ বন্ধ থাকায় ফেরিতেই যাত্রীরা গাদাগাদি করে পদ্মা পাড়ি দেন। ফলে ঘাট এলাকা বা ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। অনেককেই দেখা গেছে মাস্কবিহীন। দূরপাল্লা বা অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীবাহী যানবাহন বন্ধ থাকলেও বরিশাল, খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে মোটরসাইকেল, থ্রি হুইলার, ইজিবাইকসহ হালকা যানবাহনে ৩-৪ গুণ ভাড়া গুনে যাত্রীরা বাংলাবাজার ঘাটে পৌঁছান।
অপরদিকে একই চিত্র ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের ক্ষেত্রেও। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা হালকা যানবাহনে ৩-৪ গুণ ভাড়া দিয়ে ফেরিতে পদ্মা পাড়ি দিয়েও আবারও ভোগান্তিতেও পড়েন। বাংলাবাজার থেকে ইজিবাইক, সিএনজি, মোটরসাইকেলে বরিশালে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, গোপালগঞ্জ ৫০০ টাকা, খুলনা ৭০০ টাকা, মাদারীপুর ২০০ টাকা, বাগেরহাট ৬৫০ টাকাসহ প্রতিটি যানবাহনেই কয়েক গুণ ভাড়া আদায় করা হয় যাত্রীদের কাছ থেকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহাসড়ক ও অভ্যন্তরীণ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেট দিলেও বিভিন্ন অযুহাতে যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। পণ্যবাহী ট্রাকের সাথে সাথে অন্যান্য ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ১৪টি ফেরি চালু থাকায় যাত্রী ও যানবাহনগুলো পারাপারের অপেক্ষায় ঘাটে আটকে থাকতে দেখা যায়নি।
ঢাকার গুলিস্থানের রিকশাচালক আনোয়ার মিয়া বলেন, সোমবার থেকে রাস্তায় রিকশা নিয়ে বের হতে পারব না। আর রাস্তায় বের হতে না পারলে খাব কি? আর ঘর ভাড়াই বা দেব কিভাবে? তাই স্ত্রী, ছেলে মেয়েসহ গ্রামে ফিরে যাচ্ছি।
মোহাম্মদপুরের ঝালমুড়ি বিক্রেতা রফিক মাতুব্বর বলেন, করোনার কারণে এমনিতেই মানুষ আগের মতো ঝালমুড়ি খায় না। তার উপর কঠোর লকডাউনে তো ঘর থেকেই বের হতে পারব না। তাই ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি বরিশাল চলে যাচ্ছি। বাস বন্ধ থাকায় ইজিবাইকে ২০০ টাকার ভাড়া ৭০০ টাকা দিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে এসে ফেরিতে নদী পার হয়েছি। এখন বরিশাল যাব মোটরসাইকেলে চাচ্ছে ১২০০ টাকা ভাড়া।
মোংলা থেকে ঢাকাগামী শফিকুর রহমান বলেন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। সোমবার থেকে অফিস বন্ধ হয়ে যাবে তাই ময়মনসিংহ গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছি। পথে পথে অনেক ভাড়া দিয়েছি আর ভোগান্তির কোনো শেষ নেই।
বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ঘাট সহকারী ম্যানেজার ভজন কুমার সাহা বলেন, সকাল থেকেই ফেরিতে উভয়মুখী যাত্রী চাপ রয়েছে। আমাদের সকল ফেরি চালু থাকায় পারাপারে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা যাত্রীদের বলা হলেও বেশির ভাগ যাত্রীরাই তা মানছেন না। আর অনেকে তো মাস্কও ব্যবহার করছেন না।