ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বেড়েছে গাড়ির চাপ। তবে মহাসড়কে এখনো পর্যন্ত কোনো যানজট সৃষ্টি হয়নি। এতে করে কোনো রকমের ভোগান্তি ছাড়াই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন যাত্রীরা। তবে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে ৬৭০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সকালে মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে। মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে মেঘনাঘাট টোলপ্লাজা এবং যাত্রামুড়া, তারাবো, রূপসী, কর্ণগোপ, ভুলতা এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
সরেজমিনে মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমরাইল মোড়, কাঁচপুর, মদনপুর, মোঘরাপাড়া ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিক গতিতে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের দিকে ছুটছে বিভিন্ন যানবাহন। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও কোনো যানজট নেই।
এদিকে অফিস আদালত ছুটি হওয়ায় গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যার পর থেকে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপও বেড়েছে। এর ফলে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। তবে এ নিয়ে দীর্ঘ যানজটের শঙ্কা করছে না হাইওয়ে পুলিশ। যানজট এড়াতে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।
কথা হয় সাগর হোসেন নামে এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি জানান, দুর্ভোগ এড়াতে আমি আগেই পরিবারকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছি। গতকাল আমার অফিস থেকে ছুটি দেওয়ায় আজ গ্রামের পথে রওনা দিয়েছি। এখনো পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা ভালো দেখলেও শেষ পর্যন্ত ঠিকসময়ে গ্রামে যেতে পারলেই বাঁচি।
হানিফ পরিবহনের চালক গাজী সোহেল জানান, গতবারের তুলনায় মহাসড়কের এবারের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। মহাসড়কে কোথাও কোনো ভাঙাচোরা না থাকায় আমরা স্বাচ্ছন্দ্যেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাচল করতে পারছি।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী কামরুল হাসান জানান, ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরছি। অন্য বছরের চেয়ে এবছর একটু বেশি ভালো লাগছে। আসতে দেখলাম সড়কে অনেক পুলিশ ডিউটি করছেন। অতিরিক্ত পুলিশ থাকায় যানবাহন চালকরা সড়কে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করছেন। এতে করে ভোগান্তি অনেকটাই কমে গেছে বলে জানান তিনি।
শাহনাজ আক্তার নামে আরেক যাত্রী জানান, পুলিশ থাকায় সড়কের শৃঙ্খলা ঠিক রয়েছে। সব ধরনের যানবাহন সুন্দরভাবে চলাচল করছে। এভাবে যদি যানবাহন চলাফেরা করে তবে যানজটের যে ভোগান্তি পোহাতে হয় তা অনেকাংশে আমাদের কম হবে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নবীর হোসেন বলেন, স্বাভাবিকভাবে এই মহাসড়কে ২০ থেকে ২৫ হাজার গাড়ি চলাচল করলেও গতকাল থেকে এই মহাসড়ক দিয়ে তার চেয়ে বেশি গাড়ি চলাচল করেছে। আজ থেকে গাড়ির চাপ স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি নিরসনে প্রতিটি পয়েন্টে আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি হোন্ডা পার্টি, মোবাইল টিম, সাদা পোশাকে পুলিশ থাকছে। এছাড়া মহাসড়কে যেকোনো গাড়ি বিকল হয়ে গেলে তা সরানোর জন্য দুইটি রেকার প্রস্তুত রেখেছি।
গাজীপুর জোনের হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আহমেদ খান বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক ও এটি দেশের ইকোনমিক লাইফলাইন। এখানে প্রতিদিন অন্তত ৪০ হাজার গাড়ি চলাচল করে, সেটা যদি ৬০ হাজারও হয় তবুও সমস্যা হবে না। যানজট ও যাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনে কাজ করতে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের ৬৭০ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।