কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার ধরলা নদীর উপর স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ ও ড্রামের তৈরি সাঁকো নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা। এতে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর হলো নদী পাড়ের ২ হাজার চরবাসীর।
কয়েকজন প্রবাসীর আর্থিক সহায়তা ছাড়াও গ্রামবাসীরা নিজেদের বাঁশ-ড্রাম ও শ্রম দিয়ে মাত্র ৫ দিনেই তৈরি করা হয় ৫০ ফুট দীর্ঘ সাঁকোটি। সোমবার দুপুরের পর এই সাঁকো চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেন সাংবাদিক ও লেখক আব্দুল খালেক ফারুক।
জানা গেছে, ধরলা নদী তীরবর্তী নামা জয়কুমার ও সারডোব গ্রামের গ্রামের ৪ শতাধিক পরিবার দীর্ঘদিন যাবৎ একটি সেতুর অভাবে যাতায়াতে ভোগান্তিতে পড়েন। বছরের প্রায় ৬ মাস কেটে যায় কষ্ট করে যাতায়াত করতে। চর থেকে একতা বাজার হয়ে মূল ভূখণ্ডে আসতে একটি খাল পার হতে হয়। চলতি বর্ষা মৌসুমে যখন বৃষ্টিপাত হয়, তখন এ খালে পানি ওঠে। আস্তে আস্তে নদীর পানি বাড়লে এই খাল দিয়ে প্রবাহিত হয় বন্যার পানি। প্রতিবছর অক্টোবর মাস পর্যন্ত এ খালে পানি থাকে।
ফলে খালের উপর চলাচলকারী জনগণ পড়েন ভোগান্তিতে। ছোট খাল বলে নৌকা বা খেয়ার ব্যবস্থাও নেই। তাই গ্রামবাসীরা কয়েকটি বাঁশ সংগ্রহ করে সাঁকো তৈরি করে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রেখেছিলেন। কিন্তু এই সাঁকো দিয়ে নারী ও শিশুরা পার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন। জরুরি রোগী পরিবহন ও পণ্য পারাপারে এতদিন এ খাল দিয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
এমন অবস্থা নিরসনে জয়কুমর গ্রামের মানুষ অনেক দিন ধরে একটি কংক্রিট বা কাঠের ব্রিজের দাবি জানালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এতে কোনো সাড়া দেয়নি। পরে স্থানীয় প্রবাসীদের আর্থিক সহায়তায় ড্রাম ও বাঁশ দিয়ে নিজেদের চেষ্টায় তৈরি করা হয় ভাসমান সাঁকো। এরপর এটি নির্মাণ শেষে চলাচলের জন্য চালু করে দেওয়া হয়। ফলে গ্রামবাসীরা রয়েছেন এখন খানিকটা স্বস্তিতে।
নামা জয়কুমর গ্রামের বাসিন্দা ইনসাফুল মিয়া জানান, এ সেতুটি হওয়ায় লোকজন পারাপার ছাড়াও আমাদের চরে উৎপাদিত ধান, ভুট্টা, পাট ও আলুসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি ও অন্যান্য ফসল পার করতে এখন আর কোনো সমস্যা হবে না। এতে আমরা খুশি।