করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত ফের ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধের আজ পঞ্চম দিন। বিধিনিষেধের প্রথম কয়েক দিন সড়কে মানুষের, গাড়ির সংখ্যা কম থাকলেও আজ (২৭ জুলাই) মঙ্গলবার দেখা গেছে এর উল্টো চিত্র। দিন যতোই গড়াচ্ছে, ততোই সড়কে বাড়ছে গাড়ির চাপ আর গলিতে বেড়েছে মানুষের ভিড়।
রাজধানীর প্রতিটি পয়েন্টে পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেক পোস্ট থাকা সত্ত্বেও অথচ নানা অজুহাত দেখিয়ে মানুষ ছুটছে যেখানে-সেখানে। একইভাবে সড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপও।
চলমান কঠোর বিধিনিষেধে সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকার কথা থাকলেও এ সময় কিছু অফিস খোলা রয়েছে। খোলা রয়েছে ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ফলে গত রবিবার থেকে সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অফিসগামীরা ভাড়া ভাগাভাগি করে রিকশায় চড়ছেন অনেকেই। পাড়া মহল্লার দোকানপাটগুলোও আস্তে আস্তে খুলছে। অন্যদিকে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের তল্লাশি অব্যাহত আছে। বিভিন্ন সিগন্যালে গাড়িগুলোকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
সকালে থেকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড, শংকর, ধানমন্ডি লেক, ঝিগাতলা, সিটি কলেজ মোড়, রাসেল স্কয়ার মোড়, গণভবন চেকপোস্ট , শাহবাগ ও কাওরানবাজারসহ অনেকগুলো পয়েন্ট সরেজমিনে এমন চিত্র চোখে পড়ে।
দেখা যায়, জীবিকার তাগিদে অনেকেই পাড়া-মহল্লায় ছোট দোকানগুলো খুলেছে। এদিকে সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ রয়েছে। সঙ্গে চলছে রিকশা, মোটরসাইকেল, অফিস বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক। ট্রাফিক পুলিশের ব্যাপক তল্লাশির ফলে চেকপোস্টগুলোয় গাড়ির জটলা সৃষ্টি হয়েছে। তবুও পুলিশ প্রতিটি গাড়ির যাত্রীদের তল্লাশি করছে। যারা অযথা বাইরে বের হয়েছেন বা সন্তোষজনক জবাব দিতে পারছেন না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীতে বৃষ্টি শুরু হলে পথচারীদের বিভিন্ন দোকানের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। একান্ত জরুরি প্রয়োজন যাদের, তাদের বৃষ্টি থেকে বাঁচতে পর্দা টেনে রিকশায় চড়তে দেখা গেছে। বৃষ্টিতে কিছু সময়ের জন্য ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল চেকপোস্টগুলো। বৃষ্টি কমার পরে আবারও শুরু হয় পুলিশের তল্লাশি।
চেক পোস্টে দায়িত্বরত কর্মকর্তা রমনা ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রেফাতুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষ যারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন অধিকাংশরাই কোনো না কোনো প্রয়োজনে বের হচ্ছেন। দেখা গেছে, অনেকেই আর্থিক কাজে যাচ্ছেন, রোগী দেখতে যাচ্ছেন, টিকা নিতে যাচ্ছেন, বিভিন্ন পণ্যবাহী গাড়ি আসছে। এছাড়া বিগত দিগুলোর চেয়ে এবারের বিধিনিষেধ সবই কম বেশি মেনে চলছে। এমনটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমরা যাদেরকে সড়কে পাচ্ছি খুব স্বল্প সংখ্যক মানুষ বের হওয়ার পর্যাপ্ত কারণ দেখারতে পারেনি। যারা ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো কারণ না দেখাতে পারছে তাদেরকে জরিমানা করা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি, অন্তত কেউ যেন অযথা ঘর থেকে বের না হয়। যাদের কথায় সন্তুষ্ট হচ্ছি না বা কারণ যুক্তিসংগত মনে হচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।