রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানায় কর্মজীবীদের কর্মস্থলে ফেরার সুবিধার্থে শনিবার রাত ৮টা থেকে রবিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত নৌযান চলাচলের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউএ)। পরবর্তীতে এ সময় বৃদ্ধি করে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
তবে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকা রুটের লঞ্চ মালিকদের অতি মুনাফালোভের কারণে কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে বিআইডব্লিউএ’র এ উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার পথে। লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে যাত্রী পরিবহন থেকে বিরত রয়েছেন বেশীরভাগ লঞ্চ মালিক। বিভাগীয় শহর বরিশালের নৌবন্দরে ৯টি লঞ্চ থাকলেও মাত্র তিনটি লঞ্চ যাত্রী পরিবহন করছে।
রবিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে বরিশাল নদী বন্দর ত্যাগ করে লঞ্চ তিনটি। তবে নদী বন্দরে থাকা বাকি পাঁচটি লঞ্চ যাত্রী পরিবহন বন্ধ রেখেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোলা থেকে ১৩টি এবং বরগুনা ও পিরোজপুর থেকে দুটি করে লঞ্চ রবিবার সকালে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। সবগুলো লঞ্চ যাত্রীতে পরিপূর্ণ ছিল।
এদিকে লঞ্চ বন্ধ থাকায় বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে রবিবারও ছিল ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড়। সেখানে দাঁড়িয়ে দেখা গেছে, প্রতি মিনিটে দুটি করে বাস যাত্রী নিয়ে মাওয়া ফেরিঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।
রবিবার বেলা ১২টায় বরিশাল নৌবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, লঞ্চ ছাড়াবে এমন আশায় শতাধিক যাত্রী লঞ্চঘাটে অপেক্ষা করছেন। ঘাট ইজারা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মো. হানিফ জানান, সকাল থেকে যাত্রীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন।
বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশালের বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বেলা ১২টার দিকে বরগুনা থেকে ঢাকামুখী দুটি লঞ্চ বরিশাল নৌবন্দরে ভিড়ে কিছু যাত্রী নিয়ে গেছে। বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে এমভি কীর্তনখোলা, কুয়াকাটা এবং এডভেঞ্চার লঞ্চ ছেড়ে যাবে।
লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি সুন্দরবন লঞ্চ কম্পানির মালিক সাইদুর রহমান রিন্টু সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে যাত্রী পরিবহনে বিরত থাকার কারণ প্রসঙ্গে বলেন, সরকারিভাবে বিলম্বে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বেশীরভাগ যাত্রী সড়কপথে ঢাকায় চলে গেছেন। নৌবন্দরে এখনও যাত্রীরা অপেক্ষা করছেন বলা হলে রিন্টু বলেন, বিচ্ছিন্ন ১০০-২০০ যাত্রী নিয়ে একটি বড় লঞ্চ চালানো সম্ভব নয়। তবুও তিনটি লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে।
ঢাকা-বরিশাল রুটের সুরভী লঞ্চ কম্পানির অন্যতম পরিচালক রিয়াজ উল কবির শনিবার রাতে বলেন, ৫ আগষ্ট পর্যন্ত লকডাউন। তাই অধিকাংশ জনবল ছুটিতে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক মাস্টার-ড্রাইভার লঞ্চে নেই। দুজন মাস্টার ও দুজন ড্রাইভার ছাড়া লঞ্চ চালানো যায় না। তাই তারা লঞ্চে যাত্রী পরিবহন করবেন না।