English

26 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে শৃঙ্খলা নেই, বেপরোয়া থ্রি-হুইলার

- Advertisements -

মোঃ আব্দুল গফুর ,নন্দীগ্রাম থেকে: গুরুত্বপূর্ণ বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের সঙ্গে ঢাকা, রংপুর, নাটোর, রাজশাহী ও নওগাঁসহ বিভিন্ন জেলার সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। প্রতিদিন এই সড়কে চলাচল করে যাত্রীবাহী বাস, পাথর বোঝাই ট্রাকসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী ভারী যানবাহন। নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে নেই ট্রাফিক, নেই ফুটওভার ব্রিজ, নেই রোড ডিভাইডার। কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার সামনে দিয়েই মহাসড়কে চলে সিএনজিসহ সব ধরণের থ্রি হুইলার। প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারেনি হাইওয়ে পুলিশ। মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে কবে? এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।

দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নন্দীগ্রাম শহরের বাসস্ট্যান্ডে ফুট ওভার ব্রিজ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার করছেন সাধারণ মানুষ। মুহুর্তেই দুর্ঘটনায় প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। স্বাধীনতার ৫১ বছর পার হলেও সদরের বাসস্ট্যান্ডে ট্রাফিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন হয়নি। উপজেলা পরিষদ-থানা রোডে দিনের বেলায় ব্যস্ততম রাস্তার ওপরেই ট্রাক রেখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মালামাল ওঠানামা করলেও কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি নন্দীগ্রাম পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।

তবে মৌখিকভাবে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছেন মেয়র। থানা থেকে মাঝেমধ্যে সাময়িক ট্রাফিক ব্যবস্থা করা হলেও, স্থায়ীভাবে নেই। পৌরসভার পক্ষ থেকে যানজট নিরসনে বাসস্ট্যান্ডমুখে এক ব্যক্তিকে রেখে সাময়িক ট্রাফিক ব্যবস্থা করলেও তা কাজে আসছে না। সিএনজি, রিকশা, ভ্যানসহ যানবাহনের নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড নেই।

অনেকে বলছেন, প্রয়োজন পরিকল্পিত স্ট্যান্ড ব্যবস্থা, সচেতনা এবং কঠোরতা। এদিকে হাইওয়ে থানার সামনে দিয়েই মহাসড়কে বেপরোয়াভাবে দাপিয়ে বেড়ায় সিএনজিসহ থ্রি-হুইলার। মহাসড়কের পাশে গাছের গুড়ি রেখে ব্যবসা ও ট্রাক পার্কিংয়ে ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের কঠোরতা দেখা যায়নি।

সুত্র জানায়, ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার ইসলামপুর সেলিনা পাম্পের সামনে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে আরেকটি চলন্ত ট্রাক ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই পরিবহন ব্যবসায়ী হায়দার প্রামানিক নিহত হন। একই বছরের ২৩ ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়ক পারাপারের সময় ট্রাকের ধাক্কায় আব্দুল গফ্ফার (৬৫) নিহত হন। ২০২২ সালের ৭ মার্চ মহাসড়কের দামগাড়া এলাকায় অটোভ্যান (থ্রি-হুইলার) ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষে আবু জাফর নামের একজন নিহত হন। ১৬ জুলাই রনবাঘা এলাকার মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে সিএনজির ধাক্কায় আলতাফ হোসেন ও মোসলেমা খাতুন নামের দুজন মারা যান।

২৬ অক্টোবর নন্দীগ্রাম ফিলিং স্টেশন এলাকায় মহাসড়কে থামিয়ে রাখা ট্রাকের পেছনে বাসের ধাক্কায় হেলপার বাবু মিয়া (২৩) ও যাত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদার (৩৮) নামের দুইজন নিহত হন। বেশ কয়েকটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটলেও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারেনি হাইওয়ে পুলিশ। ফিলিং স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের পাশে দিনে রাতে ট্রাক রেখে বাড়িতে যান চালকরা। প্রাণহানির ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষনিক প্রশাসনের কঠোরতা চোখে পড়লেও কয়েকদিন যেতে না যেতেই ফের পূর্বের অবস্থা দেখা যায়। এ রিপোর্ট সংক্রান্তে অনুসন্ধানকালে তথ্য ও মন্তব্য নিতে বিভিন্ন দপ্তরে যাওয়া হয়। এরপরপরই উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কতৃপক্ষের টনক নড়ে।

এ ব্যাপারে কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, থ্রি হুইলার একেবারেই তুলে দিব। মহাসড়কে উঠতে দেব না। সড়কে যারা ট্রাক রাখে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নন্দীগ্রাম পৌরসভার মেয়র মো. আনিছুর রহমান বলেন, বাসস্ট্যান্ডে একটি ফুটওভার ব্রিজ করার উদ্যোগ নিচ্ছি। উপজেলা রোডে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে রাস্তায় ট্রাক রেখে দিনের বেলা কেউ যেন মালামাল ওঠানামা না করান, সে ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। সিএনজির নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড ছিল না, সম্প্রতি সাময়িকভাবে সেই ব্যবস্থা করেছি।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিফা নুসরাত বলেন, বাসস্ট্যান্ডে ট্রাফিক রাখারমতো পুলিশ, থানায় নেই। মহাসড়কের পাশে যারা গাছের গুড়ি রেখে ব্যবসা করেন, তাদেরকে কঠোরভাবে বলা হয়েছে। গাছের গুড়ি সরিয়ে না নিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থা জেলা থেকে নিয়ন্ত্রণ করে। ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে নন্দীগ্রামে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন