বাঙালির শোকের মাস আগস্ট । ১৯৭৫ সালের এ মাসেই বাঙালি জাতি হারিয়েছে বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন আগস্টকে শোকের মাস হিসেবে বরাবর পালন করে আসছে। মাসব্যাপী পালন করছে বিভিন্ন কর্মসূচি। এরই অংশ হিসেবে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন শাখার আয়োজনে আজ (৩০ আগষ্ট) বিকেলে উপজেলার মহিমাগঞ্জে ডাকবাংলো মাঠে শোক শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধুকে স্মরন করে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মুন্সি রেজওয়ানুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাবাসির প্রানপ্রিয় নেতা, হ্যামিলিয়নের বাশিওয়ালা খ্যাত বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ, ৩২ গাইবান্ধা ৪ গোবিন্দগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সংগ্রামী সফল সভাপতি জননেতা আলহাজ্ব অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ্ব অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত বেদনাবিধুর শোকের দিন। সেনাবাহিনীর কিছু সংখ্যক বিপথগামী সদস্য সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প। শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে বাঙালি জাতি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট শেষ রাতে (১৫ আগস্ট) ঘাতকরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসায় নৃশংসভাবে হত্যা করে। তাকে সপরিবারে নিঃশেষ করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেল, সদ্য বিবাহিত পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসেরকে সেখানে হত্যা করা হয়। বেইলি রোডে সরকারি বাসায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবি সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আবদুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টুকে। আরেক বাসায় হত্যা করা হয় তার ভাগ্নে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণিকে। তারা ধানমন্ডি এলাকার বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপসের বাবা-মা।
বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আক্রমণ হয়েছে শুনে সেখানে যাওয়ার জন্য রওনা দেন বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ। তবে ৩২ নম্বরের সামনে পথভ্রষ্ট সেনা কর্মকর্তারা তাকে প্রথমে বাধা দেয় ও পরে হত্যা করে। এছাড়া ওইদিন ৩২ নম্বরের বাড়িতে কর্তব্যরত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ড বিশ্বের বুকে নিন্দিত ও ঘৃণিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ হয়ে আছে।
সেদিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর বড় সন্তান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ও ছোট বোন শেখ রেহানা শেখ হাসিনার স্বামী প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার কর্মস্থল জার্মানিতে থাকায় বেঁচে যান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন,উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী জাকারিয়া ইসলাম জুয়েল, উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান মাস্টার, উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ-বিষয়ক সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর আহবায়ক হামিদুল ইসলাম, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আব্দুল মান্নান সরকার, সহ-সভাপতি মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রচিক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন ফারুক হোসেন ফটু, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল বারী ফরহাদ। এছাড়াও বক্তাব্য রাখেন উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার ১নং প্যানেল মেয়র শাহিন আকন্দ, উপজেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক পীরজাদা আবু সুফিয়ান, উপজেলা ছাত্রলীগের সোনালি অর্জন,সাবেক সফল সভাপতি ও সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক শাকিল আকন্দ বুলবুল , উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাজেদুল ইসলাম, মহিমাগঞ্জ রংপুর সুগার মিলের কোষাধক্ষ ও আওয়ামীলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থতি ছিলেন, গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের সহ-সভাপতি আঃ সালাম গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক ফরহাদ আকন্দ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোক্তার হোসেন সাদ্দাম, বাবুল ইসলাম, গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের সহ-সম্পাদক সোহেল রানা, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের আহবায়ক তারিক রিফাত, সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম, ফুলবাড়ী ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি জীবন মন্ডল, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক গোলাম রব্বানী,যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম,ছাত্রলীগ সভাপতি সুলতান মাহমুদ লেবু, ইউপি প্যনেল চেয়ারম্যান চাঁদমিয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আগস্টে শোক পালনের অংশ হিসেবে পুরো মাসজুড়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল আওয়ামী লীগ। শোকাবহ আগস্টে সমগ্র জাতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠনসমূহ যথাযোগ্য মর্যাদা, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও ভাবগম্ভীর আর বেদনাবিধুর পরিবেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী স্মরন করছে।