কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বজ্রপাতে কলেজছাত্রের মৃত্যুর পর লাশ চুরি ঠেকাতে কবরের পাশে তাঁবু টাঙিয়ে পাঁচদিন ধরে রাতদিন পাহারা দিচ্ছেন নিহত তরুণের স্বজনেরা। কবরের পাশে পলিথিন দিয়ে উঠনো তাঁবুর নিচে বসা ও শোয়ার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেয়া হয়েছে কাঠের তৈরি চৌকি। শনিবার দুপুরে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ঘোগারকুটি গ্রামে গেলে কলেজ ছাত্রের কবরের পাশে এমনই দৃশ্য দেখা যায়।
লাশ চুরি ঠেকাতে এভাবে তিন মাস পাহারা দিবেন বলে জানিয়েছেন নিহত কলেজছাত্রের বাবা শহিদুল ইসলাম, মামা মফিজুল হক, মামি কুলসুম বেগম ও স্থানীয় আশরাফুল ও আনছার আলী।
এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর সকালে কলেজছাত্র আরিফুল ইসলাম বৃষ্টির সময় পলিথিন দিয়ে শ্যালোমেশিন ঢাকতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যায়। নিহত আরিফুল ইসলামের বাবার বাড়ি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কুমোরপুর কদমেরতল গ্রামে। সে ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের ছাত্র এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
আরিফুল ইসলাম শিশু বয়স থেকেই ঘোগারকুঠি গ্রামের নানা বাড়িতে থাকতো এবং সেখান থেকেই পড়াশোনা করতো। নানা বাড়ি থেকে ৩শ গজ দূরে মায়ের ক্রয় করা জমিতেই তার মরদেহ দাফন করা হয়। পালা করে নিহত আরিফুল ইসলামের নানা আজগার আলী, মামা হাফিজুর রহমান, স্বপন , সোহাগ ও আরিফুলের ছোটভাই আশিকুর রাতদিন জেগে কবর পাহারা দিচ্ছেন। লাশ চুরি ঠেকাতে গত পাঁচদিন ধরে কবর থেকে ১০ গজ দূরে পলিথিন দিয়ে তাঁবু টাঙিয়ে স্বজনেরা পাহারা দিচ্ছেন।
নিহত আরিফুল ইসলামের মামা মফিজুল হক ও মামি কুলসুম বেগম জানান, বর্তমানে আরিফুলের মা রাহিলা বেগম জর্ডানে রয়েছেন। আরিফুল হঠাৎ বজ্রপাতে মারা যায়। বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির লাশের মাথা কবিরাজী শাস্ত্রে না কি অনেক মূল্যবান। সে জন্য লাশটি চুরির আশঙ্কায় তারা রাতদিন কবর পাহারা দিচ্ছেন।
কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির কঙ্কালে কোনো মূল্যবান জিনিস থাকতে পারে না। এটা কুসংস্কার ও অযৌক্তিক। বজ্রপাতের সঙ্গে নিহত ব্যক্তির কঙ্কালের কোনো সম্পর্ক নেই।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন