ইউপি নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থীর ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ভোট পরবর্তী সহিংসতায় অজ্ঞাতনামা ৫০০ জনকে আসামি করে রুহিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার খবর শুনেই পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে ঠাকুরগাঁও সদরের রাজাগাঁও ইউনিয়নের ছয়টি গ্রাম।
গত রবিবার উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ আসাননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে হামিদুর রহমান (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু ও একজন আহত হন। এ ঘটনার পর কেন্দ্রের নির্বাচনী কর্মকর্তাকে আটকে রাখা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবরুদ্ধ ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ৫০০ জনকে। এরপর থেকেই গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ছয় গ্রামের পুরুষরা।
মঙ্গলবার ওই ইউনিয়নের মকিমুদ্দিন পাড়া, কদমবাগান পাড়া, সোনা মেম্বার পাড়া, আসিরত মেম্বার পাড়া, মসিরুদ্দিন মেম্বার পাড়া ও আজিবর মেম্বার পাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, হাটবাজারে ব্যস্ততা প্রায় নেই বললেই চলে। দোকানপাটও বন্ধ। কয়েকজন জানান, গত সোমবার দুপুরে মামলার খবর পাওয়ার পর থেকেই মূলত গ্রামের পুরুষরা এলাকাছাড়া।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কেন্দ্রটিতে ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে ফল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ফলে সদস্য পদে মাসুদ রানা তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শাহ আলমের চেয়ে ১০২ ভোট বেশি পান। কিন্তু ওই ফল প্রত্যাখ্যান করেন শাহ আলমের সমর্থকরা। পরে তারা একত্রিত হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে কেন্দ্রে হামলা চালান। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে লাঠিচার্জ করেন। এরপরও হামলাকারীরা নিবৃত্ত না হলে আত্মরক্ষা করতে পুলিশ হামলাকারীদের লক্ষ্য করে ২০ রাউন্ড গুলি ছোড়েন। পুলিশের ছোড়া গুলিতে হামিদুর রহমান (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হন। আহত হন আবু কালাম (৩২) নামে আরেক ব্যক্তি।
এ ব্যাপারে রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চিত্তরঞ্জণ রায় বলেন, রাজাগাঁও ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র দক্ষিণ আসাননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার তৌকির আহম্মেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।