রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টারসহ ১৬ কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বদলির আদেশ প্রাপ্তদের মধ্যে ১২ অফিস সহায়ক ছাড়াও স্টোনো টাইপিস্ট, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নিরাপত্তা প্রহরী ও একজন ওয়ার্ড মাস্টার রয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৬ কর্মচারীকে আগামী সাত দিনের মধ্যে বদলি/পদায়নকৃত কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আট দিনের দিন হতে সরাসরি অব্যাহতি দেওয়া হবে।
এদের মধ্যে ওয়ার্ড মাস্টার আবুল হাসানকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরিচ্ছন্নতাকর্মী হাছিনা বেগমকে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, নিরাপত্তা প্রহরী রহমত আলীকে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, স্টোনো টাইপিস্ট আব্দুল আলিমকে পটুয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। সম্প্রতি ওয়ার্ড মাস্টার আবুল হাসান হাসপাতালের মালামাল চুরির সময় উপ-পরিচালক মোকাদ্দেম হোসেনের কাছে হাতেনাতে আটক হন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দুটি এসি চুরির অভিযোগ রয়েছে।
অফিস সহায়ক আল-আমিনকে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে, হামিদুল ইসলামকে শেরপুর সদর হাসপাতালে, মোর্শেদ হাবিবকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে, শাহজাদা মিয়াকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে, আবু জাফরকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে, সিরাজুল ইসলামকে মিঠামইন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, বিউটি আক্তারকে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতালে, ভানুরাম সরকারকে নবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, নুরুজ্জামানকে তাহেরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, রইচ উদ্দিনকে জগন্নাথপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, মোহিত আল রশীদ উদয়কে জামালপুর সদর হাসপাতাল এবং দুলাল বসুনিয়াকে পটুয়াখালীর গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদায়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ সেপ্টেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নিজের মাকে ভর্তি করাতে গিয়ে ‘বকশিশ’ সিন্ডিকেট চক্রের হয়রানির শিকার হন সেখানকার অর্থোসার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট এবিএম রাশেদুল আমীর। পরের দিন ওই চিকিৎসক কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে হাসপাতালের পরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে এ ঘটনায় হাসপাতালের দুই কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়।
এদিকে সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে অসাধু চক্রের দৌরাত্ম্য, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও জনদুর্ভোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন সমাবেশ করে সম্মিলিত চিকিৎসক সমাজ। মানববন্ধন থেকে দ্রুত হাসপাতালে সেবা ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনাসহ দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য রোধে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
ওই দিন মানববন্ধনে রমেকের অধ্যক্ষ বিমল রায় অভিযোগ করে বলেন, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কাছে তারাও জিম্মি। এই সিন্ডিকেটের কারণে রোগীরাও ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছে।