English

25 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে বানভাসিরা

- Advertisements -

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদেও পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার (১৯ জুন) ভোর ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদেও পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির কারণে তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে দেখা দিয়েছে শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, গোখাদ্য ও জ্বালানির তীব্র সংকট।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, গত তিনদিন ধরে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৯ উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের প্রায় ১৫০টি গ্রামের প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ৬০টি বাড়ি। চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চলের মানুষ খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে রয়েছে। পাশাপাশি গবাদি পশুর খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

বন্যায় জেলায় প্রায় ৬৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে তীব্র পানির স্রোতে নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মুড়িয়ারহাট এলাকায় অস্থায়ী বেড়িবাঁধের প্রায় ২৫ ফুট ভেঙে নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানি প্রবেশ করছে নাগেশ্বরী পৌরসভা এলাকায়। এ ছাড়া উপজেলার কেদার ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর এলাকার দুধকুমার নদেও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে।

কেদার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াজেদুল কবির রাশেদ জানিয়েছেন, বাঁধটি ভেঙে কেদার ইউনিয়নের এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর বলেন, তার ইউনিয়নে ১ হাজার ২০০ বাড়ি পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় প্রায় ৬ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া তিন হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। গত ৫ দিনে নদী ভাঙন এবং পানির তোড়ে আরাজিপাড়া, রলাকাটা ও চর যাত্রাপুরের ৬০ পরিবার বাড়িঘর হারিয়েছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আবদুর রশীদ জানিয়েছেন, চলতি বন্যায় তলিয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা বেড়েছে। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ কর্তৃপক্ষের নজরে নেওয়া হবে। যাতে বন্যা পুনর্বাসন প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় তাদেরকে সহযোগিতা করা যায়।

কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার শামছুল আলম বলেন, জেলায় মাধ্যমিক স্কুল, কলেজে ও মাদরাসা পর্যায়ে ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার কারণে বন্ধ রয়েছে। আর একটি প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় রৌমারীতে ৪৪টি এবং কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ১১টিসহ ৫৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. মনজুর-এ-মুর্শেদ জানান, বন্যাদুর্গতদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।

জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম বলেন, বন্যায় মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় ৯ উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষের সহায়তার জন্য ২৯৫ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শুকনা খাবার এক হাজার প্যাকট, শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং গোখাদ্য ক্রয় বাবদ ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন