প্রেমের টানে সুদুর ইতালি থেকে এসে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী এসে রত্না রানী দাস নামে একজনকে বিয়ে করেছেন আলি সান্দ্র চিয়ারোমিন্তে নামের ইতালির এক যুবক।
এ ঘটনায় ওই এলাকার মানুষদের মাঝে তৈরি হয়েছে আনন্দঘন মুহুর্ত ও উৎসব মূখর পরিবেশের। অনেকেই ছুটে আসছেন এই যুগলদের দেখতে।
সোমবার (২৫ জুলাই) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল খোকোপাড়া গ্রামে মেয়ের বাড়িতে ইতালির ওই যুবকের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। রত্না রানী দাস উপজেলার চাড়োল খোকোপাড়া গ্রামের মারকুস দাসের মেয়ে।
জানা যায়, মারকুস দাসের চাচাতো ভাই জোসেফ ও চাচতো বোন আনজেলা ইতালিতে বসবাস করেন তাদের সাথে পরিচয় হয় আলি সান্দ্র চিয়ারো মিন্তের। তাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হলে বাংলাদেশী মেয়েকে বিয়ে করার জন্য আলি সান্দ্র চিয়ারোমিন্তে তাদের জানান বাংলাদেশের ভালো কোনো মেয়ে থাকলে মেয়ের সন্ধান দিতে।
পরে মারকুস দাসের চাচাতো ভাই জোসেফ ও চাচতো বোন আনজেলা রত্না রানী দাসের কথা জানান আলি সান্দ্র চিয়ারোমিন্তেকে। পাঁচ মাস আগে রত্না রানী দাস ও সান্দ্র চিয়ারো মিন্তের ইমোর মাধ্যমে যোগাযোগ হয়। ইমোতে ভিডিও কলের দেখা ও কথা হলে দুজন দুজনকে পছন্দ করে। এভাবেই পাঁচ মাস ধরে ভিডিও কল ও মেসেজ চ্যাটিং এর মাধ্যমে তাদের দু’জনের সম্পর্কে গড়ে ওঠে।
এক পর্যায়ে আলি সান্দ্র চিয়ারোমিন্তে রত্না রানীকে বিয়ে করার কথা তার চাচাতো ভাই ও বোনকে জানালে তারা বিষয়টি রত্না রানীর বাবাকে জানান। এতে তার বাবা ইতালির ওই যুবকের সাথে রত্না রানীর বিয়ে দেওয়ার সম্মতি প্রকাশ করেন। তাই সুদুর ইতালি থেকে বিয়ে করতে ছুটে এসেছেন বাংলাদেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর চাড়োল খোকোপাড়া গ্রামে। পরে তাদের দুজনকে বিবাহ দেওয়া হয়। ঢাকা মেইলকে এসব কথা জানান মেয়ের বাবা মারকুস দাস।
রত্না রানী দাস বলেন, ইতালির ওই যুবকের সাথে গত পাঁচ মাস আগে ইমোতে ভিডিও কল ও মেসেজ চ্যাটিং এর মাধ্যমে সম্পর্ক হয়। পরে সে আমাকে বিয়ে করার জন্য আমার পরিবারকে জানালে আমার পরিবার এই বিয়েতে সম্মতি দেন তাই পরিবারের সম্মতিতে আমাদের বিয়ে হয়েছে। আমাদের দুজনের বিয়ে হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। আগামী সাতদিনের মধ্যে আমার স্বামী ইতালি চলে যাবেন। পরবর্তীতে আমার পাসপোর্ট ও ভিসা করার মধ্যে আমাকেও নিয়ে যাবেন ইতালি।
চাড়োল খোকোপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মহেষ ঢাকা মেইলকে বলেন, ইতালি থেকে এসে এক যুবক আমাদের গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করেছেন। তাই অনেক দূরদূরান্তের লোক তাদের দেখতে ছুটে আসছেন। গ্রামে আনন্দঘন পরিবেশে তৈরি হয়েছে।
হেলন রাণী নামে ওই গ্রামের এক গৃহবধূ বলেন, আগে দেখতাম এলাকার মেয়েদের সাথে আশেপাশের অন্য এলাকার ছেলেদের বিয়ে হত। এখন দেখছি বিদেশীরাও এসে আমাদের গ্রামের মেয়েকে বিয়ে করেছেন। তাতে খুব ভালো লাগছে আমাদের।
আলি সান্দ্র চিয়ারোমিন্তে ইংরেজি ও বাংলা না জানায় তার তেমন কোনো অনুভূতির কথা প্রকাশ করতে পারেনি।চাড়োল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার চ্যাটার্জী বাবু ঢাকা মেইলকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ইতালি থেকে ওই যুবক আমাদের এলাকায় এসে বিয়ে করেছে এটি আসলেই আশ্চর্যের বিষয়। বিয়েটি তাদের পারিবারিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ছেলেটি ইতালি চলে যাবে পরবর্তীতে মেয়েটির পাসপোর্ট ও ভিসা সম্পন্ন হলে তার স্বামী তাকেও ইতালি নিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।