রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় আকিকার দাওয়াত খেয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন চার শতাধিক মানুষ। এর মধ্যে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন ৫০ জন।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলার বড় আলমপুর ইউনিয়নের স্থানীয় গাজী খাঁ (দক্ষিণ সোনারপাড়া) গ্রামের মো. লিটন মিয়ার বাড়িতে তার ছেলের আকিকার দাওয়াতের আয়োজন করা হয়। দাওয়াতে খাওয়ার কিছুক্ষণ পরই অনেকে বমি, পেট ব্যথা ও ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে যান। এর মধ্যে অনেকেই আবার বাড়িতে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অসুস্থদের মধ্যে অধিকাংশই গার্মেন্টস কর্মী, যারা ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন এবং সপ্তাহের শুরুতেই ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু শারীরিক অবস্থার কারণে এখন অনেকেই ঢাকায় ফিরতে পারছেন না, ফলে চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছেন তারা।
আকিকার আয়োজনকারী লিটন মিয়া বলেন, ‘আমরা খুবই যত্ন সহকারে খাবারের আয়োজন করেছিলাম। তারপরও কীভাবে কী হলো, কিছুই বুঝতে পারছি না। আমরা নিজেরাও অসুস্থ। তবে এটা ষড়যন্ত্রও হতে পারে। নয়তো এমনটা হওয়ার কথা নয়।’
অসুস্থ আজিজুল হক বলেন, ‘দাওয়াত খেয়ে আসার পর রাত থেকেই পাতলা পায়খানাসহ জ্বর। পরে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছি। আমার পরিবারের সবার একই অবস্থা।’
শাফিউল ইসলাম বলেন, ‘আকিকার দাওয়াত খাওয়ার পরেই সকাল থেকে পাতলা পায়খানাসহ প্রচণ্ড জ্বর। আমি একজন ঢাকার গার্মেন্টসকর্মী। আজ থেকে আমার অফিস খোলা হলেও আমি অসুস্থতার জন্য ঢাকায় যেতে পারিনি। জানি না চাকরি থাকবে কি না।’
পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদ রানা বলেন, ‘খাবারে ফুড পয়জনিংয়ের কারণে এমনটা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। খাবার পরীক্ষা করা গেলে প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করা যেত। কিন্তু কয়েক দিন আগের ঘটনা হওয়ায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া খাবারে সংক্রমিত কিছু উপাদান থাকতে পারে, যা থেকে এই সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গতকাল পর্যন্ত ৪২ জন ভর্তি ছিল। আজকে আবার নতুন করে ৮ জন ভর্তি হয়েছে।’
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ‘চার শতাধিক লোক আকিকার দাওয়াত খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি। আমরা স্বপ্রণোদিতভাবে তদন্ত করে জানতে পেরেছি, গরুর গোস্ত যারা খেয়েছে, তারা ফুড পয়জনিংয়ের শিকার হয়েছে। এখন সবাই আশঙ্কামুক্ত। অনেকে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছে। ফুড পয়জনিং ব্যতীত অন্য কোনো ঘটনা আছে কি না, আমরা খতিয়ে দেখছি।’