গাইবান্ধায় স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সন্তানসহ ট্রেনের নিচে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রাজিয়া বেগম (২৩) নামে এক নারী। এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে জুবায়ের রহমান জামিল নামে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। তবে আহত হলেও প্রাণে বেঁচে গেছে দেড় বছরের শিশু সন্তানটি।
সোমবার সকালে গাইবান্ধা জেলা সদরের মাঝিপাড়া এলাকার রেললাইনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজিয়া বেগম সদর উপজেলার মধ্য গোবিন্দপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। কলেজছাত্র জুবায়ের রহমান জামিল সদরের এসকেএস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সায়েন্সের সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে ও সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী এলাকার জাহিদুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গাইবান্ধা জেলা সদরের মাঝিপাড়ার আনোয়ার হোসেনের সাথে তিন বছর আগে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্কের কারণে সুনামগঞ্জ থেকে গাইবান্ধায় এসে বিয়ে করেন রাজিয়া খাতুন। প্রেমের বিয়ে হওয়ায় রাজিয়ার বাড়ি থেকে কেউ গাইবান্ধায় আসতো না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন করতো তার স্বামী আনোয়ার।
এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার তাকে শারীরিক নির্যাতন করে রাতভর দেড় বছরের শিশু সন্তানসহ ঘড়ে উঠতে দেয়নি স্বামী আনোয়ার। সোমবার সকালে মনের ক্ষোভে বাড়ির পাশের রেললাইনে ছেলে আবিরকে নিয়ে আত্মহত্যার জন্য লাইনে দাঁড়ান তিনি।
এ সময় ওই এলাকার একটি ছাত্রাবাসে থাকা এইচএসসি শিক্ষার্থী জাবির হোসেন তাদের দেখতে পেয়ে বাচাঁনোর জন্য চেষ্টা করেন। লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় রাজিয়ার সাথে তার ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে শিশুটিকে লাইনে পাশে ছুড়ে ফেলতে পারলেও এর মধ্যেই দোলনচাঁপা ট্রেনের ধাক্কায় লাইন থেকে ছিটকে পড়েন দু’জনই।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের দুজনসহ শিশুটিকে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাদের দু’জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যায়।
বোনারপাড়া রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক মো. ফারুক হোসেন জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।