কুড়িগ্রামে বানের পানিতে ভাসছে চর, দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলের গ্রামের পর গ্রাম। বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি ঘটছে। বৃষ্টি আর উজানের ঢলে উত্তাল হয়েছে উঠেছে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারসহ অন্যান্য নদীগুলো। দু’কূল উপচে পানি ঢুকছে নতুন নতুন গ্রামে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, জেলার ৯ উপজেলার অন্তত ২০টি ইউনিয়নের চর, দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলের আড়াই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। পানিতে তলিয়ে গেছে পথঘাট।
এর ফলে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। বাড়িঘরে পানি ওঠায় নৌকায় আর নৌকা না থাকায় পানির মধ্যে মাঁচা তৈরি করে তাতে বসবাস করছে অনেক পরিবার। ঘরের ভিতরে পানি থাকায় খাবার রান্না করতে পারছে না। এ অবস্থায় নৌকায় মালামাল নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছেন অনেকে।
এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, বন্যার পানিতে এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৪৪৯ হেক্টর ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এরমধ্যে ১ হাজার ৫০৭ হেক্টর আঊশ ধান, ২ হাজার ৪৫৬ হেক্টর পাট, ৭৯ হেক্টর তিল, ১ হাজার ১১৬ হেক্টর শাকসবজি, ৩৫ হেক্টর চিনা, ৩৫ হেক্টর ভুট্টা, ৩০ হেক্টর চিনাবাদাম ও ৫৩ হেক্টর মরিচ ক্ষেত রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানিয়েছেন, বন্যার্তদের সহায়তায় এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ লাখ টাকা, ২০ মেট্রিক টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং শিশুখাদ্য ক্রয়ের জন্য ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছেন, শনিবার সকাল ৬টায় ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর ফেরিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।