প্রতিদিন কতই না নিত্যনতুন ঘটনা ঘটে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। এবার তেমনি একটি নতুন ঘটনা ঘটেছে গাইবান্ধার ধাপেরহাটের সদরপাড়া গ্রামে। আগের বউ আছে, এ তথ্য গোপন করে পুনরায় বিয়ে করতে এসে বউয়ের পরিবর্তে জরিমানা হিসেবে তিনটি গরু কনে পক্ষকে দিয়ে খালি হাতে ফিরে গেলেন বর।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ওই তিনটি গরু দিয়ে কনের বাড়ি থেকে ছাড়া পেয়েছেন তাতীপাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে বিপুল মিয়া (২৫)।
জানা যায়, বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে সদরপাড়া গ্রামে পারিবারিকভাবে রাজা মণ্ডলের কন্যার সঙ্গে বিপুল মিয়ার বিয়ের দিন ধার্য ছিল। যথাসময়ে কনের বাড়িতে আসেন বরযাত্রী। ধুমধাম করে খাওয়া-দাওয়া শেষে নিবন্ধন বই লিখতে বসেন কাজী। দুই লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে অর্ধেক লেখা সম্পন্ন হতেই বিয়ের আসরে আসেন বরের আগের স্ত্রী মুক্তা বেগম। প্রতিবাদ করে বলেন- ‘এ বিয়ে হবে না, আমি তার স্ত্রী আছি।’
এমন বিপদ দেখে কেটে পরার চেষ্টা করেন বর বিপুল মিয়া। এমন কাণ্ডে বিয়ে বাড়িতে শুরু হয় হট্টগোল। বিপুল মিয়ার আগেও একটি বউ রয়েছে, এ বিষয়টি ঘটক এবং বরের অভিভাবক মেয়ে পক্ষের নিকট গোপন রেখেছিলেন। মুহূর্তেই বিয়ে বাড়িতে পরে যায় শোকের ছায়া।
যৌতুক বাবদ অগ্রিম টাকাও নিয়েছে বর পক্ষ। বুধবার সারা রাত দেনদরবার করে কোনো সুরাহা হয়নি। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে সিদ্ধান্ত হয় মেয়ে পক্ষকে ক্ষতিপূরণ বাবদ এক লাখ টাকা দেয়ার। কিন্ত নগদ টাকা দিতে অক্ষম বরপক্ষ। তাই স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিকে বলে জরিমানা বাবদ বরের পিতার গোয়ালে থাকা তিনটি গরু দিতে সম্মত হয় বরপক্ষ।
যেমন কথা তেমন কাজ। বরপক্ষ ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকার বদলে তিনটি বকনা গরু কনের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে খালি হাতে ফিরে যায় বাড়ি।
বিপুল মিয়ার প্রথম স্ত্রী ভাতগ্রাম এলাকার মুক্তা জানান, এক বছর আগে তাকে বিয়ে করেছে বিপুল। স্বামীর বাড়িতে এসে সংসার চলাকালীন শ্বশুরের অত্যাচারে সে পিত্রালয়ে গেলে তাকে আর সংসারে ফিরে আনতে যায়নি কেউ। তালাকও দেয়নি। আবার নতুন বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছে বিপুল, এমন খবর পেয়ে সে পিতার বাড়ি থেকে ছুটে আসে একটি মেয়েকে সর্বনাশের হাত থেকে বাঁচাতে।
এ বিষয়ে বরপক্ষ বলে, প্রথম স্ত্রী মুক্তা বেগমকে তালাক দেয়া হয়েছে কিন্তু নোটিশ পায়নি সে। বরের এমন কাণ্ডে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।