বিএনপি-জামায়াতের দ্বিতীয় দফা অবরোধের প্রথম দিন রোববার সকালে পিকেটাররা বগুড়া শহরতলির ছিলিমপুর তেলিপুকুর এলাকায় নির্বিচারে শিশুখাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী সাতটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ৪-৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ সময় পুলিশের গুলিতে পৌর বিএনপির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের আঞ্চলিক নেতা মাহবুব আলমসহ চারজন আহত হওয়ার দাবি করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, তারা গুলি করেনি। নিজেদের নিক্ষেপ করা ককটেল লেগে কেউ আহত হতে পারে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল ৮টার দিকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী মাথায় হেলমেট ও লাঠিসোটা হাতে শহরতলির ছিলিমপুর তেলিপুকুর এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে।
এ সময় পুলিশ প্রহরায় যানবাহন ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। পিকেটাররা হঠাৎ মহাসড়কে এসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে শিশুখাদ্য পরিবহণের গাড়ি, কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ডভ্যান ও ট্রাকসহ ৭-৮টি গাড়ি ভাঙচুর করে। টের পেয়ে পুলিশ সদস্যরা এপিসি নিয়ে সেখানে এলে হামলাকারী পিকেটাররা পাশে গলির মধ্যে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ৪-৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পুলিশ প্রহরায় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করে।
শিশুখাদ্য পরিবহণের গাড়ির হেলপার মইনুল ইসলাম জানান, তারা পার্বতীপুর থেকে দুধ নিয়ে গাজীপুরে যাচ্ছিলেন। পুলিশ পাহারা দিয়ে তাদের যেতে সহযোগিতা করছিল। বগুড়া শহরতলির তেলিপুকুর এলাকায় হঠাৎ একটা গলি থেকে কয়েকজন যুবক বের হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে তাদের গাড়ির সামনের কাঁচ ভেঙে যায়।
তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে ৭-৮টি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করেছে।
বগুড়া জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম খায়রুল বাশার জানান, রোববার সকাল ৮টার দিকে তাদের নেতাকর্মীরা তেলিপুকুর এলাকায় শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি পালন করছিল। এ সময় পুলিশ এসে ছত্রভঙ্গ করার নামে রাইফেল দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এতে বগুড়া পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মাহবুব আলম পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ছাড়াও আরও ২-৩ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে মাহবুব আলমকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তবে বগুড়া পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) স্নিগ্ধ আখতার জানান, তারা কোনো গুলি করেননি। অবরোধকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। পুলিশের এপিসি দেখে দৌড়ে পালানোর সময় তারা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। অনভিজ্ঞ পিকেটারদের ছোড়া ককটেল নিজেদের লেগে কেউ আহত হতে পারে। শুধু টিয়ারশেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে।
অন্যদিকে বগুড়া শহর জামায়াতের আমির আবিদুর রহমান সোহেলের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা সকালে নওদাপাড়া এলাকায় মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এছাড়াও চারমাথা, তিনমাথা, সাবগ্রাম এলাকায় অবরোধের সমর্থনে অবস্থান নেন।
সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, সকালে জামায়াতের নেতাকর্মীরা শহরের বাহিরে ঝটিকা মিছিল বের করেন। পুলিশ দেখে তারা পালিয়ে যান।
এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ সারা দেশে অবরোধের নামে সন্ত্রাস নৈরাজ্যের প্রতিবাদে দুপুরে সদরের মাটিডালি মোড়ে সমাবেশ করেছে।