কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি, অথচ সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখেন পাশাপাশি দুই কবর! বাড়ির সামনে এমন সাজানো-গোছানো জোড়া কবর দেখে সবাই ভাববেন পরম যত্নে মালিকের প্রিয়জনরা সমাহিত। কিন্তু আসলে কোনো কবরই নেই এখানে। প্রায় ১৫ বছর ধরে গ্রামবাসীর যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করতেই এমন পরিকল্পনা।
সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মাইজবাড়ি ইউনিয়নের সর্দার পাড়া গ্রামে।
গ্রামের হাবিবুর রহমানের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের বিরোধ আব্দুর রশিদের। আর এ বিরোধের জেরেই আব্দুর রশিদের বাড়ির সামনে কৃত্রিম এই জোড়া কবর তৈরি করে হাবিবুর। এতে পুরো গ্রামের মানুষের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আলতাফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, নিজেদের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে পুরো গ্রামের রাস্তা বন্ধ করতেই এই কৃত্রিম কবর তৈরি করা হয়েছে। রাতের আঁধারে বাড়ির পাশে গর্ত করে সেখান থেকে মাটি এনে এই জোড়া কবর তৈরি করা হয়। আসলে এখানে কোনো কবর নেই।
গ্রামের বাসিন্দা মকবুল বলেন, হাবিবুর রহমান তার বাড়ির সামনে এই কবরটি রাস্তা বন্ধ করতে বানিয়েছেন। কারণ কবর দেখলে কবরের উপর দিয়ে তো কেও যাতায়াত করবে না, তাই তিনি মাটি কেটে কবরের মতো করে বানিয়ে রেখেছেন। এতে পুরো গ্রামের মানুষের সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে তার বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি, পরে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
মাইজবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন জানান, বিষয়টি জানার পর গ্রামের সবাইকে নিয়ে সেখানে গিয়ে কবরের মাটি সরিয়ে দেখা যায় কবরের নিচে ইটের রাস্তা। দুইজনের মধ্যে বিরোধের জের ধরে গ্রামবাসীর রাস্তা বন্ধ করতেই এই জোড়া কবর তৈরি করা হয়েছে।
সমস্যা সমাধানের জন্য দুপক্ষকে ডেকে গ্রামবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তা থেকে কবর সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, মাইজবাড়ির সর্দার পাড়ার এই রাস্তা দিয়ে পাঁচটি গ্রামের প্রতিদিন প্রায় আট হাজার মানুষ চলাচল করে।