আগামীকাল বৃহস্পতিবার বগুড়ার মহাস্থানগড়ে ঐতিহ্যবাহী শেষ বৈশাখী মেলা। এতে লাখো মানুষের পাদচারণায় মুখরিত হবে মহাস্থানগড়।
অতীত সভ্যতার লীলা ভূমিতে শায়ীত আছেন বিখ্যাত ওলীয়ে কামেল হযরত শাহ সুলতান। তার স্মৃতি স্মরণে প্রতি বছর বাংলা বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার মহাস্থানগড় মাজার কেন্দ্রীক এ মেলা উদযাপন হয়।
গত ২বছর মহামারি করোনা ও রমজান মাসের কারণে মেলার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কিন্তু এবার মেলা প্রিয়সীদের আগমনে জনস্রোতে পরিনত হবে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মেলা শুরুর আগেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা অস্থায়ী দোকানপাট বসিয়েছে। বৃহস্পতিবার সারা-রাত হযরত শাহ সুলতান রহঃ এর মাজার ভক্ত আসেকান, সাধু-সন্ন্যাসী, জটাধারী বাউল, ফকির দরবেশ শরিয়ত ও মারফত জারি সারি আধ্যাতিক গানে মগ্ন থাকবে।
অন্যদিকে মাজার জিয়ারতকারী মুসুল্লিরা সারা-রাত জেগে ইবাদত বন্দেগি করবেন।
মেলা কে ঘিরে মহাস্থান মাজারের চতুর্পাশে বিচিত্র আলোকসজ্জায় ডেকোরেশন করা হয়েছে। এলাকাবাসী বলছেন, বৈরী আবহাওয়া না হলে মহাস্থান মাজার এলাকায় লাখ লাখ মানুষের সমাগম হবে। মহাস্থানগড়ে আগে কথিত গাঁজার মেলা বলা হলেও কালের বিবর্তনে গত কয়েক বছর হলো মাজারের পাশে কোন গাঁজার ধোঁওয়া উড়েনি। তবে মাজার এলাকা থেকে বেশদূরে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বেশ কিছু জটাধারী ভন্ডদের প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন করতে দেখা গেছে।
মহাস্থান মাজার এলাকা গাঁজা বা অসামাজিক কার্যকলাপ যাতে না হয়, এজন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। মহাস্থান হযরত শাহ সুলতানের মাজারের পবিত্রতা রক্ষার্থে বৈশাখী মেলায় কোন প্রকার গাঁজা, মদ, হেরোইন, ফেন্সিডিল, লটারী, জুয়া সহ কোন প্রকার মাদক সেবন ও বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। এজন্য গত ৯মে সোমবার মহাস্থান মাজার মসজিদ কমিটির আয়োজনে এলাকাবাসীদের নিয়ে প্রশাসনের সুধী সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহাস্থান মাজার এলাকা থাকবে সিসি ক্যামেরায় নিয়ন্ত্রণ। ইতিমধ্যেই মাজারের মানকালী ও পাথরপট্রি এলাকায় আস্তানা গেড়ে বসে পড়েছে হযরত শাহ সুলতানের অনুসারীরা।
মহাস্থান মাজার এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে কেমন প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে, এবিষয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক কুমার দাস (পিপিএম) বলেন, মহাস্থানগড় হযরত শাহ সুলতানের বাৎসরিক উরস উপলক্ষে মাদক, অসামাজিক কার্যকলাপ, চুরি, ছিনতাই ও জুয়া প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকবে সর্বাত্মক সজাগ। মেলাকে কেন্দ্র করে বৈরাগত মানুষদের নিরাপত্তায় প্রায় ৬শতাধিক পোশাক ধারী ও সাদা পোশাকে পুলিশ, ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিষ্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। মহাস্থান মাজার ও মসজিদ এলাকায় শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছাড়া অন্য কিছু হতে দেয়া হবে না। জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ বৈশাখী মেলা উৎসব পালনে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
আইনশৃঙ্খলার কন্ট্রোল রুম মহাস্থান ডাকবাংলোয় বসানো হয়েছে।
মেলা উপলক্ষে মহাস্থান মাজারের আশেপাশে এলাকাবাসীদের বাড়ি বাড়ি মেয়ে জামাই সহ আত্মীয় স্বজনদের ভির জমেছে। মহাস্থান শেষ বৈশাখী মেলায় শতশত মণ এখানকার ঐতিহ্যবাহী কটকট বিক্রির ধুম পড়ে যায়।