গোলাম রব্বানী শিপন, মহাস্থান বগুড়া থেকে: পড়েছে বাংলা কার্তিক প্রকৃতির রাজত্বে চলছে হেমন্ত কন্যার লুকোচুরি। ভোরের ঘাসে শিশিরের উপস্থিতি আর সকালের সোনাভরা রোদ জানান দিচ্ছে, শীতের আগমন। হেমন্তের মূল সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় গ্রাম বাংলায়। কুয়াশার চাদর ইতোমধ্যেই আলতো মায়ার চাদর বিছিয়ে দিয়েছে গ্রামের পথ প্রান্তরে।
তাই শীতের আগাম সবুজ সবজি দিয়ে ভরে গেছে সবজির মহারাজ্য বগুড়ার মহাস্থানহাট। আগে শীতকালে পাওয়া যেত বিচিত্র সবজি। সেই সবজিতে শুরু হতো নবান্ন উৎসব। এখন শীতের আগমন হালকা হলেও আগাম সবজিতে ভরপুর বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থান পাইকারি সবজি হাট। বুধবার (৮নভেম্বর) সকালে মহাস্থান হাটের সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত বগুড়ার মহাস্থানহাটের সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ, ফেনি, সিলেট এলাকাসহ দক্ষিণের বিভিন্ন জেলায়। শীতের আগাম জাতের সবজি চাষে ভালো দাম মিলছে।
প্রতি বছরই এ অঞ্চলের চাষীরা শীতের আগাম সবজি চাষে ঝুকে পড়েন। তবে এবার টানা বর্ষা না হওয়াই বীজতলা সুরক্ষিত রয়েছে। এ কারনে এবার শীত মৌসুমে সবজি এক জোয়ারে উঠতে শুরু করেছে বলে মহাস্থান হাটে সবজি বিক্রি করতে আসা কৃষকেরা জানিয়েছেন। আবার এক রাতের আকষ্মিক বৃষ্টিতে এ অঞ্চলের অনেক কৃষকদের নিচু জমির ধান ও সবজি চারা পঁচন ধরে অনেক ক্ষতিসাধিত হয়েছে বলে অনেক কৃষকেরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার মহাস্থান এলাকার আশেপাশের উপজেলার কৃষকেরা এক সাথে লাগানো চাষকৃত সবজি বিপ্লব ঘটিয়ে বাজার অনেকটা স্থিতিশীল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় খুঁচরা সবজি ব্যবসায়ীরা।
এ হাট থেকে অনেক পাইকার সবজি কিনে তারা দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করার পাশাপাশি খুচরা বিক্রি করে থাকেন। সকালে মহাস্থান হাটে শতশত নারী ও পুরুষ শ্রমিকেরা সবজি জাত করে বস্তায় ভরিয়ে প্রস্তুত করেন। সেগুলো আবার ট্রাকে তুলছে শ্রমিকেরা। বগুড়ায় এবারও রেকর্ড পরিমাণ জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে। আবাদ হওয়া আগাম সবজির মধ্যে রয়েছে মুলা, শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ঢ্যাঁড়স, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক, কাঁচামরিচ, করলা, বরবটি, ঝিঙে, শসা, কচুমুখী, পটল, পেপে, ইত্যাদি।বুধবার মহাস্থান হাটের চলাচল পাইকারি সবজি বাজার।
ফুলকপি দাম প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ২০/২৫ টাকা পিস, মুলা ১৫ থেকে ২০টাকা কেজি, শিম ৬০টাকা কেজি, বেগুন ২০ টাকা কেজি, মিষ্টি লাউ ৪০টাকা কেজি, ঢ্যাঁড়স ৩০টাকা , পটল, ২৫ টাকা, করলা ৩৫টাকা, বইকচু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, ঝিঙে ২৫ টাকা কেজি, পালংশাক ৩০টাকা কেজি, লালশাক ১৫ টাকা কেজি, পালংশাক ২০ টাকা কেজি, দুধকুসি ৫০টাকা কেজি, মরিচ ৭০ টাকা কেজি, ধনেশাক ৫০ টাকা কেজি। বুধবার ও শনিবার সাপ্তাহিক হাট বার ছাড়াও প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে এ হাটের বেচাকেনা। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও হাট পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সু-নির্দিষ্ট পরিচালনায় ক্রেতা বিক্রেতায় বেশ জমে উঠেছে।