গোলাম রব্বানী শিপন, মহাস্থান বগুড়াঃ বগুড়ার শিবগঞ্জে নিজের ফেসবুক একাউন্ট আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে গাছের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে নাঈম (১৭)নামের ১ স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত নাঈম বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের সুদামপুর নয়াপাড়া গ্রামের হামিদুর রহমানের পুত্র। সে মহাস্থান উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনির ছাত্র ছিল।
এলাকাবাসী সূত্রে জনা যায়, নিহত নাঈম এলাকার পাশ্ববর্তী গ্রামে ১ মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে নাঈম তার পরিবারে বিয়ের জন্য বললেও সামনে এসএসসি পরিক্ষার জন্য তার বাবা-মা দেরি করতে বলেন। এদিকে নাঈদের প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাওয়ায় নাঈম মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় নাঈম তার শয়ন কক্ষ থেকে বের হয়ে বাড়ির পাশে বাঁশ ঝাড়ের একটি কাঁঠালের গাছের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। রবিবার সকালে নিহতের পিতা তার জমির কপি কাটতে যাওয়ার সময় গাছে ঝুলন্ত লাশ দেখে চিৎকার দিলে আশেপাশের প্রতিবেশীরা ছুটে এসে লাশ উদ্ধার করেন। এলাকাবাসী আরও জানান, নিহত নাঈম বকাটের মত মাথার চুল কাটায় তার পিতার সাথে কথার কাটাটি হয়েছিল। এজন্যও সে মনের ক্ষোভে রাতে সবার অজান্তে গাছের সাথে দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে। এদিকে নিহত নাঈমের ফেসবুক একাউন্ট তালাশ করে জানা যায়, মৃত্যুর আগে যে ফেসবুকে “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না লিল্লাহি রাজিউন” লিখে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে ছিল। তার ফেসবুক প্রোফাইলে আরও লেখা দেখা যায়, “হঠাৎ করে মরে গেলে ক্ষমা করে দিও সবাই আমাকে”
“আমি আর বাঁচতে চাই না নতুন কোন স্বপ্ন নিয়ে” আমার স্বপ্ন গুলো অপূর্ণই রয়ে যাবে কারন আমার মৃত্যু টা অল্প বয়সেই হয়ে যাবে। নাঈমের পিতা হামিদুর রহমান বলেন, ২ ছেলের ভিতর বড় ছেলে নাঈমের জেদ ছিল বেশি। এবং সে ছিল আদরের। সামান্য রাগ বিরাগে এভাবে চীর বিদায় নেবে তিনি বারবার আহাজারি কণ্ঠে এসব বলেন।
নিহতের বরাত দিয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনজুরুল আলম বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশাররফ হোসেনকে পাঠানো হয়েছে। নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত নাঈম মাথার চুল অস্বাভাবিক ভাবে কাটার কারণে তার বাবার সঙ্গে এনিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে (ওসি) জানিয়েছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর বিষয়ে আরও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে। এদিকে নাঈমের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তার বন্ধু/বান্ধন আত্মীয়- স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীদের মাঝে নেমে আসে শোকের ছায়া।