দুই-তিন বছর আগে গ্রামের একটি পক্ষ মান্নান পীরের ইমামতিতে নামাজ আদায়ের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এ নিয়ে মান্নান পীরের পক্ষে আশেকপুর সিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক, জমিদাতা আব্দুল মান্নানসহ পীরের মুরিদরা এক পক্ষে অবস্থান নেয় এবং পারতেখুর সরদারপাড়ার মৃত আনসার আলী সরদারের ছেলে খোকা মিয়া ও তাঁর ভাই সাবেক মেম্বার শহিদুল ইসলাম এবং মাওলানা আব্দুর রশিদসহ গ্রামের অপর একটি পক্ষ তৈরি হয়।
ফলে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এক পর্যায়ে খোকা মিয়ার পক্ষ পারতেখুর সরদারপাড়ার ভেতরে নতুন আলাদা একটি ঈদগাহ মাঠ নির্মাণ করে পুরাতন মাঠ ত্যাগ করে এ বছর থেকেই সেখানে ঈদের নামাজ আদায়ের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এমতাবস্থায় ইউপি সদস্য নান্নু, সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম, ইনসান আলী টুকুসহ গ্রামের তৃতীয় একটি পক্ষ ঈদের এক দিন আগে গতকাল বুধবার রাতে মান্নান পীরের পক্ষের সাথে বৈঠকে বসেন।
সেখানে তৃতীয় পক্ষ প্রস্তাব করে, তারা মান্নান পীরের ইমামতিতে নামাজ আদায় করবে না।
তারা নিজেরা আগে প্রথম জামায়াতে নামাজ আদায় করবে। যারা মান্নান পীরের ইমামতি নামাজ আদায় করতে চায় তারা পরে দ্বিতীয় জামায়াতে নামাজ আদায় করলে করতে পারে। কিন্তু ওই বৈঠকে কোনো পক্ষই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ফলে মান্নান পীরের পক্ষ ওই মাঠ ত্যাগ করে মান্নান পীরের প্রতিষ্ঠিত হাফেজিয়া এতিমখানা মাদরাসা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করে।
অপরদিকে তৃতীয় পক্ষের লোকজন দ্বিতীয় পক্ষের নতুন মাঠেও যায়নি এবং পুরাতন মাঠেও নামাজ আদায় করেনি। গ্রামের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ পাশের খরনা ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করে। পারতেখুর গ্রামের এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় আশপাশের মানুষেরা যেমন নিন্দা জানাচ্ছেন, তেমনি বিষয়টি নিয়ে দিন দিন উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নান্নু ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, একমাত্র মান্নান পীর নাছোড়বান্দা হওয়ার কারণেই গ্রামের মানুষ তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে ডা. আব্দুল মান্নান ওরফে মান্নান পীরের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে মান্নান পীরের মুরিদ, মাঠের বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ঠিকাদার আব্দুল মোত্তালেব জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই মাঠে ঈদের জামাত করা হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। তাই মান্নান পীরের ইমামতিতে মাদরাসা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।