নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর সদরের আনন্দ নগর মহল্লায় একটি মুরগির দাবি নিয়ে দুই প্রতিবেশী নারীর বিবাদ গড়িয়েছে গ্রাম্য শালিস পর্যন্ত। শালিশে মুরগিটি কাউকে না দিয়ে একটি মাদ্রাসায় এতিমদের খাবার হিসেবে দান করে দেবার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। শালিশের সিদ্ধান্ত একজন মানলেও অন্যজন মানতে নারাজ। অতঃপর স্বামী তার স্ত্রীকে শালিসের রায় মানাতে ব্যর্থ হয়ে আত্মত্যার হুমকি দিয়ে শেষমেষ আত্মগোপনে চলে যান। এদিকে, স্ত্রী স্বামীকে জীবিত ফেরত পেতে মানত করে বসলেন একজোড়া খাসি। খাসির মাংস দিয়ে খিচুরি রান্না করে তিনশত লোককে খাওয়ানোর আয়োজন করা হল। এটি কোনো গল্প নয়। ঘটে যাওয়া একটি সত্য ঘটনা।
জানা গেছে, নাটোর পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের আনন্দ নগর মহল্লার নুর ইসলাম নুরু ও প্রতিবেশী রবিউল করিম রবির স্ত্রীদের মধ্যে একটা মুরগীর দাবি নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ দ্বন্দ্ব শালিশ পর্যন্ত গড়ালে স্থানীয় মাতবররা মুরগিটি একটি মাদ্রাসায় দান করতে সিদ্ধান্ত দেন। সিদ্ধান্তটি রবিউল করিমের স্ত্রী মানলেও মানেননি নুরুল ইসলামের স্ত্রী। মুরগী দান না করার সিদ্ধান্ত নিলে স্ত্রীর উপর অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে চলে যান নুরুল ইসলাম। এদিকে অভিমানী স্বামীকে ফিরে পেতে স্ত্রী মানত করেন জোড়া খাসি জবাই দিয়ে গ্রামবাসীকে খাওয়ানোর।
শুক্রবার (৩ জুন) সকাল থেকে নুরুল ইসলামের বাড়িতে চলছিলো মানুষ খাওয়ানোর এ আয়োজন। শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে অতিথিদের আপ্যায়ন করানো হয়। নুরুল ইসলাম নুরুর ছেলে শেখ ফরিদ বলেন, মুরগী নিয়ে দ্বন্দ্বে তার বাবা আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছেড়ে যান। বাবাকে জীবিত ফেরত পেতে মা খাসি মানত করেন। আজ সে মানতের খাসির মাংশ দিয়ে অতিথিদের খাওয়ানো হয়েছে। ৩০০ জন মানুষ সেই মাংস দিয়ে খিচুরি খেয়েছেন।
নুর ইসলামের প্রতিবেশী ইউনুছ আলী মোল্লা জানান, নুরুলের বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় তার (ইউনুছ আলী) বাড়িতেই চলে এ আয়োজন। ১২ হাজার টাকা মূল্যের খাসি ও ৬০ কেজি চাল দিয়ে খিচুরী রান্না করা হয়। প্রায় ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে তিনশ লোক দাওয়াত করে খাওয়ানো ব্যবস্থা করা হয়।
পৌর সদরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফজলুর রহমান ফজল ও সাবেক কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন বাবলু জানান, তারা বিষয়টি শুনেছেন কিন্তু দাওয়াত পাননি। তবে ঘটনাটি এলাকায় বেশ আলোচিত হচ্ছে।