পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি বিদ্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে ভারতীয় ‘কাঁচা বাদাম’ গানের সঙ্গে নাচ করায় প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার (২১ মার্চ) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আকতার। তিনি বলেন, আমার দপ্তর থেকে নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। নোটিশের জবাব পত্রপ্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কারণ দর্শানোর চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মদিনে ছাত্রীরা কাঁচা বাদাম ও হিন্দি গানের সঙ্গে নাচ করে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত তা পত্রপ্রাপ্তির তিন কার্য দিবসের মধ্যে জবাব দিতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান আরও বলেন বলেন, ছাত্রীরা ভুলবশত হিন্দি ও কাঁচা বাদাম গানের সঙ্গে নাচ করেছে। যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। আমি সেখানে উপস্থিত থাকলে এমন হতো না। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ছাত্রীরাও বিষয়টি নিয়ে বেশ ভয়ে আছে।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে উপজেলার সলিমপুরের ‘মানিকনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘কাচা বাদাম’ ও ‘হিন্দি গানের’ সঙ্গে নেচে-গেয়ে জন্মদিন পালন করে। এ সময় বিদ্যালয়ের নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করা হলে তা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি ভাইরাল হওয়ায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমালোচনার মুখে পড়ে। অনেকে ফেসবুকে নানা ধরনের মন্তব্য করেন। পরবর্তীতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই পেজটি থেকে ভিডিও ডিলিট করে দেয়।
এসব আলোচনা-সমালোচনার কারণে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন।
প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা অফিসার বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধানকে মনে রাখতে হবে, এটি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিশুরা অনুষ্ঠানে আনন্দ-হুল্লোড় করবে এটা ঠিক। কিন্তু অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন কিছুই শিশুদের করানো যাবে না।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিএম ইমরুল কায়েস বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন অনুষ্ঠানে কেন তারা শিক্ষার্থীদের দিয়ে এমন নাচ-গান করালেন তা জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব দিতে তিন কার্যদিবস পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।