পাবনা জেলা সদর উপজেলার পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে আপন দুই ভাইসহ তিন কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (২৪ জুন) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের ভাদুরিয়া ডাঙ্গীর পদ্মা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো- চরতারাপুর ইউনিয়নের নতুন গোহাইবাড়ি এলাকার আলাল প্রামাণিকের দুই ছেলে ছাব্বির হোসেন (১৪) ও সিয়াম হোসেন (১০)। ছাব্বির নতুন বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণি এবং সিয়াম গোহাইল বাড়ি সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
অপরজন চরতারাপুর ইউনিয়নের আটঘরিয়াপাড়া গ্রামের ইসলাম সরদারের ছেলে নূর হোসেন (১০)। সে কাঁচিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার দুপুর ১টার দিকে বাড়ির পাশের একটি আম গাছে কয়েকজন মিলে আর্জেন্টিনার পতাকা টাঙাচ্ছিল তারা। পরে তারা গাছ থেকে নেমে বাড়ি থেকে গামছা নিয়ে নদীতে গোসল করতে যায়। এসময় বালুর স্তুপের ওপর দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বালু ধসে পানিতে দ্রুত তলিয়ে যায় সিয়াম হোসেন ও নূর হোসেন। তাদের দুজনকে বাঁচাতে গিয়ে বড় ভাই ছাব্বিরও পানিতে তলিয়ে যায়। স্থানীয়রা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে একজনকে জীবিত ও অপর তিনজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তাদের সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা আলাল প্রামাণিক বলেন, আমি এখন কেমন করে বেঁচে থাকবো। আমিতো একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। দুই ছেলে একই সঙ্গে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলো। একজন বাবার পক্ষে এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারবে না।
চরতারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, কয়েকজন বন্ধু মিলে পদ্মা নদীতে গোসল করতে গিয়ে চারজন তলিয়ে গেলে একজনকে বাঁচানো গেলেও তিনজনকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। অল্প কয়েক মিনিটের ব্যবধানে একসঙ্গে তিনজনের মৃত্যুতে আমরা হতভম্ব। পুরো গ্রাম এখন শোকে কাতর।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রওশন আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, একসঙ্গে গোসলে নেমে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি খুবই বেদনাদায়ক। এখন নদীতে পানি বাড়ছে তাই সন্তানদের দেখে রাখতে হবে।