English

28 C
Dhaka
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

কুয়াশায় প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা

- Advertisements -

আব্দুল গফুর, নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি: প্রকৃতিতে শুরু হয়েছে ঋতুবদলের আয়োজন। শরৎ পেরিয়ে নামছে হেমন্ত, চলছে কার্তিক মাস। এরপর শীতকাল কিন্তু এখনই প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। এরই মধ্যেই বইতে শুরু করেছে হিম বাতাস,সেইসাথে হালকা শীতের ছোঁয়া। অনুভব হচ্ছে কুয়াশা আচ্ছন্ন হয়ে থাকা ভোরবেলা।

বগুড়ায় নন্দীগ্রাম উপজেলায় সারাদিন গরম থাকলেও গভীর রাত থেকে শুরু হয়েছে হালকা হিমেল হাওয়া,সঙ্গে নামছে হালকা কুয়াশা। শীতকে ঘিরে সক্রিয় হচ্ছে বিভিন্ন পিঠাপুলির দোকানগুলো। বাংলা পঞ্জিকার হিসেবে হেমন্তের পর অগ্রহায়ণ পেরিয়ে তবেই আসবে শীতকাল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রকৃতির বিরুপ প্রভাব ও জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে হেমন্তের শুরুতেই পাওয়া যাচ্ছে শীতের আগাম বার্তা।

বৃহস্পতিবার ৭ নভেম্বর ভোর সাড়ে ৬টার দিকে নন্দীগ্রাম বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াশার কারণে প্রকৃতিতে ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন টানা গরমের পর কুয়াশামাখা পরিবেশ পেয়ে উচ্ছ্বসিত নন্দীগ্রামের বাসিন্দারা। সড়কে কিছু যানবাহনে হেডলাইট জ্বালিয়েও চলছে বিভিন্ন গাড়ি।

গ্রামবাংলার মানুষের জীবনে হেমন্ত মানেই নবান্ন উৎসবের আমেজ। হেমন্ত এলেই এই জনপদের মানুষের মাঝে আনন্দ বিরাজ করে। হেমন্তের আগমনে গ্রামের মেঠোপথে সকালে হাঠলেই পা ভিজে যাই শিশির কণাতে। হেমন্তের আগমনে মাঠে মাঠে হেসে উঠে সোনালী ধান। পাকাধানের মৌ মৌ সুমৃষ্ট সুভাসে মুখরিত চারিপাশ। আর কয়দিন পরেই কৃষকের ঘরে ঘরে উঠবে রক্তজলকরা সোনালী রোপা ধান আর এই নতুন ধানের চাউল থেকে বাংলার গৃহবধুরা গুরা তৈরী করে নতুন খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরী করবে হরেক রকমের বাঙ্গালী পিঠা-পুলি। আসতে শুরু করবে মেয়ে-জামাই।

কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস জুড়েই বাংলাদেশে হেমন্তের বিস্তৃতি। শরতের কাশফুল মাটিতে নুইয়ে পড়ার পরপরই বাংলার রূপবৈচিত্র্যে হাজির হয় হেমন্ত।বসন্তের মতো তার নিজস্ব কোনো বর্ণ গন্ধ কিংবা গরিমা নেই। হেমন্ত মৌন শীতল ও অন্তর্মূখী। হেমন্তে ফোঁটা শিউলী, কামিনী, গন্ধরাজ, মল্লিকা, দেবকাঞ্চন, হিমঝুরি, রাজ অশোক প্রভৃতি ফুলের সৌরভ বাঙ্গালির প্রাণে সঞ্চার করে নতুন আমেজ। ভোরের শিশির ভেজা ঘাসে ছড়িয়ে থাকা মুক্ত দানা আর ফসলের সোনালি সমুদ্র সবমিলিয়ে যেন পূর্ণতা পায় প্রকৃতি। হেমন্তের সকালে শিউলীর সৌরভে বাঙালির প্রাণে আসে উৎসবের আমেজ।

নন্দীগ্রাম উপজেলার স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন ধরে শেষরাতে মতো কুয়াশা পড়েছে সেইসাথে বেড়েছে শীতল বাতাস ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত হালকা ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। তবে কুয়াশার স্থায়িত্ব বেশিক্ষণ থাকছে না। সূর্য উঠলেই কুয়াশা কেটে যাচ্ছে। ৫ নং ভাটগ্রাম ইউনিয়নের আব্দুল গফফার,নন্দীগ্রাম সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা জরিনা বেগম, শামসুর রহমান, নিয়মিতই ফজরের নামাজ পড়ে হাঁটতে বের হন তারা। বৃহস্পতিবার সকালে হাঁটতে এসে তারা বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই ভোরে বেশ কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। এমনকি দিনের বেলা সূর্যের তাপমাত্রাও কমেছে। বোঝা যাচ্ছে শীত আসছে।

এদিকে প্রকৃতিতে শীতল হাওয়া বইলেও তীব্র উত্তাপ দেখা গেছে এলাকার সবজির বাজারে। তবে বাজারে মৌসুমী সবজির আগমন আরও বাড়িয়েছে এই উত্তাপ। নন্দীগ্রাম সদর সহ বিভিন্ন এলাকার, কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায় ধনেপাতা, শিম। বাঁধাকপি, মূলা ফুলকপি,পালংশাক, গাজর, টমেটো সহ নানান রকমের মৌসুমী সবজি আসছে বাজারে। তবে সরবরাহ কম থাকায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি।

বগুড়া আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, উত্তরের ঠান্ডা বায়ু প্রবাহ শুরু হয়েছে। ফলে দিন ছাড়া রাতের একটি নির্দিষ্ট সময় থেকে অনেকটা হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করছে। সন্ধ্যার পর থেকে রাত বাড়ার সঙ্গে শীত অনুভূত হয়। কুয়াশাও বাড়ছে। মধ্যরাত থেকে শুরু করে রাতের শেষ ভাগ পর্যন্ত শীত অনুভূত হচ্ছে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন