গোলাম রব্বানী শিপন, মহাস্থান বগুড়া থেকেঃ বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ে শায়িত আছেন, উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত ওলীয়ে কামেল হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (রহ.)। তার মাজার জিয়ারত করতে প্রতিদিন দেশ বিদেশ থেকে ছুটে আসেন হাজার হাজার মাজার জিয়ারতকারী মুসল্লী ও ভক্ত আসেকানেরা। তারা মাজার মসজিদ উন্নয়ন কল্পে লক্ষ লক্ষ টাকা দান করে থাকেন। মহাস্থান মাজারের চতুর্পাশে স্থাপন করা হয়েছে ৯টি দানের সিন্দুক (দানবাক্স)।
গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার মহাস্থান মাজার কমিটির সভাপতি বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তহমিনা আক্তারের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদমান আকিবের তত্ত্বাবধানে বিকেল পর্যন্ত এ সিন্দুক গুলো খুলে দানের টাকা বস্তা ভরে গণনার জন্য মহাস্থান মাজার মসজিদ কমিটি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। প্রথম দিনে ৯টি সিন্দুকের মধ্যে ছোট আকৃতির ৭টি সিন্দুক খোলা হয়। গণনা শেষে ৭টি সিন্দুকে ৮ লাখ ২৪ হাজার ৬১৫ টাকা পাওয়া যায়। পরের দিন বৃহস্পতিবার খোলা হয় বড় ২টি সিন্দুক। সেখানে মেলে ১৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬৮১ টাকা।
এ টাকা গণনা কাজে মহাস্থান উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০জন ছাত্র এবং মহাস্থান অগ্রণী ব্যাংক শাখার ১২ জন কর্মকর্তা ও মাজারে কর্মরত ১০ জন কর্মচারী অংশ নেয়। গণনা শেষে ২৩ লাখ ৮২ হাজার ২৯৬ টাকা ছাড়াও ১৮টি স্বর্ণের নাকফুল, স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মহাস্থান মাজার প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, মাজার কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩ মাস পর পর সিন্দুকগুলো খোলার কথা থাকলেও এবার প্রায় সাড়ে ৪ মাস পর খোলা হলো। সর্বশেষ গত ১৬ জুলাই সিন্দুকগুলো খুলে ২দিন ব্যাপী গণনা শেষে ৩৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা পাওয়া যায়।
এর আগে গত মার্চ মাসে সিন্দুক খুলে পাওয়া যায় ২৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। তিনি আরও জানান, এসব টাকা মহাস্থান মাজার মসজিদ এ্যাকাউন্টে অগ্রণী ব্যাংক মহাস্থান শাখায় জমা রাখা হয়। দানের টাকা গুলো মহাস্থান মাজার উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করা হয়।
এই কর্মকর্তা আরও জানান, মহাস্থান বাসষ্ট্যান্ড মহাসড়কের পাশে মাজারের দানবাক্সে সবচেয়ে বেশি টাকা পড়তো। সেখানে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের ফলে বাসস্ট্যান্ডে গাড়ি থামানোর কোন সুযোগ না থাকায় দানের পরিমাণ কমে গেছে। দুরপাল্লার যানবাহন বা যাত্রীদের দানের ইচ্ছা থাকলেও ওই সব যানবাহন ফুটওভার ব্রিজের ওপর দিয়ে চলার কারনে দানও করেছে। তিনি মহাস্থান ফুটওভার ব্রিজের শেষে ২ পাশে ২টি দান বাক্স বসানোর জন্য সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করেন।