English

25 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

৯০ সালের পর থেকেই দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা নেই: গোলাম মোহাম্মদ কাদের

- Advertisements -

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদই সর্বস্তরে বাংলাভাষা প্রচলনের আইন করেছিলেন। অনেক ক্ষেত্রেই তা বাস্তবায়ন হলেও উচ্চ আদালতে এখনো পুরোপুরি বাংলা প্রচলন হয়নি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ডিজাইন অনুযায়ী তৈরী করে ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, একুশের ধারাবাহিকতায় মুক্তির জন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছিলো।

মুক্তিযুদ্ধে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি কিন্তু এখনো আমরা মুক্তি পাইনি। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকে দেশে সংসদীয় গনতন্ত্রের নামে সংসদীয় একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতে একদিকে বৈষম্য বেড়েছে, অপরদিকে জবাবদিহিতা নেই কোথাও। স্বাধীনতার আগে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে আমাদের বৈষম্য ছিলো কিন্তু ৯০ সালের পর থেকে দেশের মানুষের সাথে বৈষম্য করছে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকে। দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে দলীয়করণ চলছে। উপজেলা পর্যায়ের নেতারাও হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকে তারাই চাকরী ও ব্যবসায় সুযোগ পাচ্ছে কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান-এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান একথা বলেন।

এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, সংসদীয় গনতন্ত্রের নামে সংবিধানে ৭০ ধারা সংযোজনের কারনে সরকার প্রধানের অধীনে দেশের নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও নিম্ন আদালত। আবার উচ্চ আদালতের নিয়োগ থেকে অনেক কিছুই সরকার প্রধানের প্রভাব থাকে, যাতে কোনমতেই গণতান্ত্রিক চর্চা সম্ভব নয়। তাই ৯০ সালের পর থেকেই দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা নেই।

সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের অরো বলেন, দেশের মানুষ সকল বৈষম্য থেকে মুক্তি চায়। দেশের মানুষ তাদের অধিকার পেতে চায়। ন্যায় বিচার ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা ফিরে পেতে চায় দেশের মানুষ। আইনের শাসন চায় দেশের মানুষ। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন আমাদের অন্যায়-অবিচারের কাছে মাথা নত না করে প্রতিবাদ করতে শিক্ষা দেয়।

তাই জাতীয় পার্টি প্রতিটি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষের পক্ষে আপোষহীন ভাবে প্রতিবাদ করবে। দেশ ও মানুষের অধিকারের প্রশ্নে জাতীয় পার্টি কখনোই আপোষ করবেনা। নির্ভয়ে গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জাতীয় পার্টি সবসময় সামনের সারিতে থাকবে। গণমানুষের মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বে জাতীয় পার্টি।

আলোচনার সভার আগে ও পরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরিফা কাদের-এর তত্ত্বাবধানে এবং সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আহমেদের উপস্থাপনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সদস্যরা। এসময় ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে পরিবেশিত দেশের গান ও কবিতায় মুগ্ধ হয়েছেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।

এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু তার বক্তৃতায় সৈয়দপুরে জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের ওপরে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, সৈয়দপুর পৌর নির্বাচনে অন্যায়ভাবে আধিপত্য বিস্তার এবং নির্বাচনকে কলুষিত করতেই শনিবার রাত ১১টায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের ওপরে হামলা করেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অবৈধ কর্মকান্ড প্রতিহত করতে জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীরা প্রস্তুত আছে। কোনভাবেই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ছাড় দেয়া হবেনা।

সৈয়দপুরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে ব্যার্থ হলে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন শুরু করবে জাতীয় পার্টি। এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু আরো বলেন, ১৯৫২ সালে মানুষের প্রশ্ন ছিলো আমরা কোন ভাষায় কথা বলবো, আর এখন মানুষের প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কী কথা বলতে পারবো? দেশের মানুষ আজ কথা বলতে পারছেনা, গণমাধ্যম সত্য কথা তুলে ধরতে পারছেনা। এটা লজ্জাজনক, দুঃখজনক। তিনি বলেন অন্যায়-অবিচার আর লুটপাটের গণতন্ত্রের থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দিতেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি।

এসময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, জাতীয় পার্টি হচ্ছে সাধারণ মানুষের সংগঠন। জাতীয় পার্টি সাহসী মানুষের রাজনৈতিক প্লাটফর্ম। জাতীয় পার্টি কখনো মাথানত করেনি, জেল-জুলুম ভয় করেনা জাতীয় পার্টি। গণমানুষের স্বার্থে সকল ভয় উপেক্ষা করে রাজনীতির মাঠে থাকবে জাতীয় পার্টি। এসময় কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি বলেছেন, জাতীয় পার্টি অসীম সম্ভাবনাময় একটি রাজনৈতিক শক্তি। জাতীয় পার্টিতে কখনোই নেতৃত্ব সংকট হয়নি, হবেও না। দেশের মানুষের কাছে জাতীয় পার্টি আস্থার সংগঠন।

জাতীয় পার্টি প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান দিয়ে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সর্বস্তরে বাংলাভাষা চালু করতে আইন করেছেন। বাংলাভাষার মর্যাদা বৃদ্ধিতে অনেক কাজ করেছেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তাই প্রয়াত রাষ্ট্রপতিকে রাষ্ট্রীয় পদক দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।

মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ মোঃ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস.এম. ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, হেনা খান পন্নি, ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক এইচ.এম. শাহরিয়ার আসিফ, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ইকবাল হোসেন তাপস, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পার্টির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভূঁইয়া।

উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম সেন্টু, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরিফা কাদের, উপদেষ্টা শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ এমপি, ড. নুরুল আজহার শামীম, মোঃ হারুন আর রশীদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, ইয়াহ্ ইয়া চৌধুরী, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল দাস, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন, এনাম জয়নাল আবেদিন, মোঃ সাইফুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন তোতা, লেঃ কর্ণেল সাব্বির আহমেদ, আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাক, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য- সুলতান মাহমুদ, এম.এ. রাজ্জাক খান, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, মিজানুর রহমান মিরু, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন মৃধা, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, আজহার ইসলাম সরকার, ডা. সেলিমা খান, এস.এম. রহমান পারভেজ, কেন্দ্রীয় নেতা নাজমুল খান, মাওলানা মোঃ খলিলুর রহমান সিদ্দিকী, সরোয়ার হোসেন, মোতাহার হোসেন, গোলাম মোস্তফা, জয়নাল আবেদীন, আলাউদ্দিন আহমেদ, ঝোটন দত্ত, মিনি খান, গোলাম কাদির, কাজী জামাল উদ্দিন, আলমগীর হোসেন, জিয়াউর রহমান বিপুল।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন