সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা: দীপু মনি এমপি বলেছেন, স্মার্ট নাগরিক হতে হলে সৎ, মানবিক ও নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন মানুষ হতে হবে।
মন্ত্রী আজ বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে এথিকস ক্লাব বাংলাদেশের আয়োজনে ১৩তম নৈতিকতা দিবসের আলোচনা ও আদর্শ শিক্ষক সম্মাননা শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী দেশে নৈতিকতার বিকাশ ও চর্চার বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর পাকিস্তানি কায়দায় সামরিক শাসন আমাদের ঘাড়ের ওপর চাপিয়ে দেয়া হলো। সেটির মধ্য দিয়ে আমরা যেটা দেখলাম, আমাদের পুরো সমাজে একটা দুর্বৃত্তের রাজনীতিকীকরন এবং একই সংগে রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন দুুটোই ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এটি থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা চলছে। সমাজকে ভালোর দিকে নেয়ার জন্য এখনও আমাদেরকে অনেক আন্দোলন, সংগ্রাম ও যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। এখনও সেই পাকিস্তানের প্রেতাত্মারদের সংগে যুদ্ধ করতে হয়। এখনও আমাদেরকে শুনতে হয় যে যারা জ্বালাও পোড়াও করে, যারা মানুষকে হত্যা করে, তাদের অংশগ্রহণ ছাড়া নাকি গণতন্ত্র হয় না। এখনও আমাদেরকে শুনতে হয়, যারা একাত্তরে মানুষ হত্যা করেছে, নারী ধর্ষণ করেছে, অগ্নি সংযোগ করেছে, সেই যুদ্ধাপরাধের দায়ে যারা দায়ী এবং তাদের যারা দোসর তাদেরকে একেবারে জয়ী হওয়ার নিশ্চয়তা যদি দেয়া না যায়, তা না হলে তারা নির্বাচনে আসছেন না। তা হলে সেটা গণতন্ত্র আর থাকবেনা, এবং সেই গণতন্ত্রের সনদ তাদের কাছ থেকেই নিতে হবে। এরকম অবস্থার মধ্যে নৈতিকতার বিকাশের পথ প্রতিকূল। তারপরও আমাদের নৈতিকতা সম্পন্ন জাতি গঠনের লক্ষে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, নিজের কাজটুকু ভালোভাবে করতে পারলে আমরা আরও উন্নত মানুষ হবো। এথিকস ক্লাব বাংলাদেশ দীর্ঘ দিন ধরে নৈতিকতা দিবস পালন করে আসছে এবং আদর্শ শিক্ষকদের সম্মাননা দিচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের আদর্শ শিক্ষকদের সম্পর্কে জানার সুযোগ পাই। শিক্ষকদের আদর্শ দেখে আমরা অনুপ্রাণিত হই।
এথিকস ক্লাব বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা ও পরিচালনা করেন। উদ্বোধনী সংগীত ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে ক্লাবের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ক্লাবের প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা। অনুষ্ঠানে ১৩তম নৈতিকতা দিবসের আলোচনা এবং প্রয়াত উপদেষ্টাদের স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, এথিকস ক্লাব বাংলাদেশের সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা এম ই চৌধুরী শামীম।
প্রসঙ্গত, শিক্ষা ও নৈতিকতার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখায় ‘আদর্শ শিক্ষক’ সম্মাননা পান দেশের ১০ জন শিক্ষক। সম্মাননা পাওয়া শিক্ষকরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুন নবী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আকরম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক কায়সার হামিদুল হক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, রাঙগামাটির নারায়ন গিরি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মু. নুুরল মোস্তফা চৌধুরী, দিনাজপুর সঙ্গীত কলেজের শিক্ষক গনেশ সরেন, সিরাজগঞ্জের রামকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক চমন আরাস্তা শিউলী, বান্দরবানের মেঘলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন।