কুমিল্লায় মন্দিরে পবিত্র কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে দায়ী করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, যখন মানুষ বাঁচাতে পারে না, তখন তারা (সরকার) নতুন নতুন নাটক করে। মানুষ যদি দ্রব্যমূল্য নিয়ে পথে নামে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা যদি ন্যায্য দাবিতে কথা বলেন! অতএব একটা না একটা কা- ঘটাতে থাকে, যাতে মানুষ ওই দিকেই বেশি ব্যস্ত থাকে। কখনো ক্যাসিনো, কখনো পাপিয়া, কখনো পরীমনি, কখনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, আবার কখনো গরিব মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা রকম অজুহাত খোঁজে তারা। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর শাহবাগে এক কর্মসূচিতে বক্তব্যকালে এসব কথা বলেন তিনি। দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ‘বাজারের শূন্য থলে ও রান্নার শন্য হাঁড়ি নিয়ে মানুষের দুর্দশাচিত্রের প্রতীকী উপস্থাপন’ শীর্ষক যৌথভাবে এই কর্মসুচির আয়োজন করে নাগরিক যুব ঐক্য, নাগরিক নারী ঐক্য ও নাগরিক ছাত্র ঐক্য।
সরকারের সমালোচনা করে মান্না বলেন, এরা মানুষকে মানুষ মনে করে না, নিজেরাও মানুষ নয়। মানুষের কান্না যেন গণমাধ্যম প্রচার না করতে পারে, তার জন্য তারা গণমাধ্যমের কণ্ঠ চেপে ধরেছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য যত রকম কাজ করা যায়, সব চেষ্টাই তারা করে। বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আজ পাতিল খালি- এমন মন্তব্য করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ক্ষমতাসীনেরা উড়োজাহাজে চড়ে ঘুরে বেড়ান আর নিচে তাকালে লস অ্যাঞ্জেলেস দেখতে পান।তারা আমাদের উন্নয়নের গল্প শোনান। অথচ দেশে ক্ষুধার আগুন জ্বলে, মানুষের ঘরে খাবার নেই। একটি জিনিসও নেই, যার দাম কম। এই যে খালি কলসি, ডেকচি ও পাতিল নিয়ে সবাই এখানে এসেছেন, এটি কোনো নাটক নয়। আমাদের হাজার ডলারের মাথাপিছু আয় দেখানো হয়, অথচ আমাদের পেটে ক্ষুধার আগুন।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সরকার ও আওয়ামী লীগকে দায়ী করে মান্না বলেন, জিনিসপত্রের দাম কমবে কীভাবে? দাম বাড়ায় তো সরকার। তারা সিন্ডিকেট বানিয়েছে। দাম কমানোর জন্য সিন্ডিকেট ডাকতে হয়। দেখা যায়, সেই সিন্ডিকেটের নেতা ও সদস্যরা আওয়ামী লীগের। বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আওয়ামী লীগের লোক। যতগুলো দোকানদার সমিতি আছে, সেগুলোতেও তাদের লোক। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে চাঁদাবাজি, টোল, সিন্ডিকেট, আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতিযোগিতা কিংবা অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের মতো যেসব কারণ চিহ্নিত হয়েছে, তার কোনো কিছুই বর্তমান সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এর কারণ, এই সরকারের নিজের ওপরই তার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।