মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা মিয়ানমারের বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে এবং সংযম হয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের যেখানে যাকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া দরকার যথাস্থানে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন-আমরা কারো সাথে যুদ্ধ করব না। সেভাবে প্রশাসন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব সবাই প্রস্তুত আছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত সেতু পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি এ বিষয়ে আরো বলেন, আমরা আক্রমণকারী হিসেবে চিহিৃত হব না। আমাদের লক্ষ্য আলোচনার টেবিলে শান্তিপূর্ণ সমাধান। প্রয়োজনে বিষয়টা আমরা জাতিসংঘে নিয়ে যাব। প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল এ ব্যাপারে জাতিসংঘে বক্তব্য রাখবেন। সেখানে তিনি ব্যাপারটা উত্থাপন করবেন।
মন্ত্রী বলেন, এখন যুদ্ধ করার সময় না। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে জ্বালানি সংকট চলছে। গোটা বিশ্বে আজকে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। আমাদের এখানে বাধ্য হয়ে জ্বালানির মূল্য বাড়াতে হয়েছে। বাধ্য হয়ে জিনিসপত্রে দাম বাড়াতে হয়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় দিন দিন বাড়ছে। কাজেই যুদ্ধটা আমাদের না। আরেকটা যুদ্ধের দরকার নাই। শান্তিপূর্ণ সমাধানই কাম্য। মিয়ানমারও আমরা আশাকরি শান্তির পথে আসবে।
আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচনের নামে মিথ্যাচার করছে। প্রতিদিনই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দিবাস্বপ্ন দেখছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদালত ফয়সালা করে দিয়েছেন। এখানে আমাদের কোনো এখতিয়ার নাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে মিউজিয়ামে চলে গেছে। ওটা আর ফিরে আসার সম্ভাবনা আপাতত নেই।
নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে এটা আমি আশ্বস্ত করতে চাই। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন হবে। আর এই সরকার মূল দায়িত্ব পালন করবে না। নির্বাচনকালীন অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো এই সরকার রুটিন ওয়ার্ক পালন করবে। যারা নির্বাচনে দায়িত্বে থাকবে তারা সরকারের অধীনে থাকবে না। তারা নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে, নির্বাচন কমিশেনের নির্দেশনা অনুযায়ি চলবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরো বলেন, নির্বাচনের সময় পুলিশকে বদলি করতে হলে করবে নির্বাচন কমিশন। এগুলো বারবার বলার পরও তারা বিষয়টি নিয়ে পানি ঘোলা করছে। তারা পানি ঘোলা করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। শেষ পযন্ত নির্বাচনে না এসে তাদের সামনে আর কোনো পথ আছে বলে আমি মনে করি না।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনা পয়েন্টে মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত মধুমতি সেতু নির্মাণ ও উদ্বোধন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এই সেতু দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি। শুধু নড়াইলবাসীর জন্য নয়, এই প্রতিশ্রুতি যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদা, খুলনাসহ গোটা অঞ্চল সুফল পাবে। ৬৯০ মিটার দীর্ঘ ৬ লেন বিশিষ্ট এ সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৬৫৯ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। আমরা যথা সময়ে কাজ শেষ করেছি। অক্টোবর মাসেই বহু প্রতিক্ষিত এ সেতুটি উদ্বোধন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা দিয়ে কথা রেখেছেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, এই সেতুর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর সুফল গোটা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ভোগ করবেন। এই সেতুকে আর কালনা সেতু বলা যাবে না এই সেতুর নাম মধুমতি সেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর নামকরণ করেছেন মধুমতি সেতু। এই সরকারের আমলে সুদুর পাহাড়ে পর্যন্ত যেদিকে যান শুধু রাস্তা। ইতিহাসে এর কোনো নজির নাই। যেখানে প্রয়োজন ৪ লেন ৬ লেন আমরা করেছি। আমরা পদ্মা সেতু করলাম, এর সুফল পেতে হলে রাস্তাও প্রশস্ত করতে হবে। সেটা আমরা জানি। আমাদের পরিকল্পনা আছে।
এ সময় নড়াইল ১ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা, গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ হোসেন, মধুমতি সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুজ্জামান, কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেহেদী হাসানসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।