সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দিতে রাজি না হওয়ায় বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে অন্যায়ভাবে তাকে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার।
দীর্ঘ ১৭ বছর কারাবাসের পর নেত্রকোনা শহরের ঐতিহাসিক মোক্তারপাড়া মাঠে গণসংবর্ধনায় মো. লুৎফুজ্জামান বাবর এই কথা বলেন। তিনি বলেন, জালিম খুনি হাসিনা সরকার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে, ফাঁসির দণ্ড দিয়েছে, অকথ্য অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে আমাকে দমিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি আপস করিনি। জালিম সরকারের কাছে মাথা নত করিনি। আমি সর্বদা সত্যের পথে ছিলাম, আছি, থাকবো, ইনশাল্লাহ্।
জেলা বিএনপি আয়োজিত রবিবার বিকালে বাবরের গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মানুষের ঢল নামে। অনুষ্ঠানস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. আনোয়ারুল হকের সভাপতিত্বে, সদস্য সচিব ডা. রফিকুল ইসলাম হিলারীর সঞ্চালনায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুজ্জামান বাবর আরও বলেন, আমি আজ আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আবেগাপ্লুত। দীর্ঘ ১৭ বছর কারাগারে কাটিয়ে আমি আবার আপনাদের মাঝে ফিরে এসেছি। আপনাদের ভালোবাসা, দোয়া এবং সমর্থন আমাকে এই দীর্ঘ পথ চলতে শক্তি জুগিয়েছে। আমি আপনাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।
তিনি বলেন, নেত্রকোনাসহ দেশবাসীর দোয়া ও সমর্থনে এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি সবকটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছি। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমি আমার জীবন বাজি রাখতে রাজি আছি, যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। দেশে এখনো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, যাতে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়। এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ভালোবাসতে হবে। সবার আগে বাংলাদেশ।
নিজ জেলায় আগমন উপলক্ষ্যে অধীর আগ্রহে থাকা নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বলতা বিরাজ করতে দেখা যায়। সকাল থেকে মাঠে আসতে থাকে মিছিল। বিকালে কানায় কানায় ভরে ওঠে মাঠটি।
সংবর্ধনায় আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আরিফা জেসমিন নাহীন, নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান নূরু, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মাহফুজুল হক, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আবু তাহের তালুকদার, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মজিবুর রহমান খান, তাজেজুল ইসলাম ফারাস সুজাত, এস. এম. মনিরুজ্জামান দুদু প্রমুখ।