দেশের বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় ঐক্য গঠনের ব্যাপারে বিএনপির দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। এর আগে জামায়াতে ইসলামীর আমিরের নেতৃত্বে দলটির চার নেতা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার বাসভবন যমুনায় বৈঠক করেন।
গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।বৈঠক শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় ঐক্য গঠনের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য, বিশেষ করে যারা বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায় অথবা স্ট্যাবিলিটি বিনষ্ট করতে চায় তাদের প্রতিহত ও প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের অবশ্যই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এই কথাগুলো আমরা বলে এসেছি।
দেশের চলমান ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে উদ্বেগের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়। আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকেও জামায়াতে ইসলামীর আমিরও তার একই ধরনের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
বৈঠক শেষে জামায়াত আমির বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের কথা অবশ্যই এসেছে। উদ্বেগ নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করেছি।সেই উদ্বেগ ওই অর্থে নয় যে দেশ মনে হয় গোল্লায় গেছে। বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা কারা বিঘ্নিত করছে, সেটা চিহ্নিত করতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমের মোকাবেলা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছি। আগামীতে দেশে কিভাবে শান্তি-শৃঙ্খলার সাথে থেকে একটা কার্যক্রমের মাধ্যমে নির্বাচনের দিকে আগাতে পারে সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশে আমাদের সবার, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য কিভাবে করা যায়, প্রশাসনে কিভাবে গতি আনা যায় এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘এগুলোর পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব আলোচনায় আমরা একমত হয়েছি, দেশের সব মানুষকে নিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এর জন্য জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন। দল-বর্ণ-নির্বিশেষে মতবিরোধ থাকবে, কিন্তু জাতীয় স্বার্থে সবাই যেন একমত থাকতে পারি সেটা আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাই।’
নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আজ কোনো আলোচনা হয়নি। কিন্তু আমরা সেটা আগেই বলেছি, নির্দিষ্ট কিছু সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার দাবি আগেই জানিয়েছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শুধু ইসকন না, যারা জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যর যে ঊর্ধ্বগতি, মানুষের কষ্ট হচ্ছে, এটাকে লাঘব করার জন্য, মানুষের সাধ্যের মধ্যে কিভাবে নিয়ে আসা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সামনে রমজান মাস আসছে, এটাকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে, এসব বিষয় নিয়ে আমরা পরামর্শ করেছি।’