প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদ এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের মুক্তির জন্য বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠন করেছিলেন। তিনি কেবল বাংলাদেশের নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন আর্ন্তজাতিক নেতা। বঙ্গবন্ধু বাংলার মাটি কপালে ছুঁয়ে মৃত্যুর পর এদেশে শায়িত হতে চেয়েছিলেন। জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার শুধু ব্যবসায়ী বান্ধব নয়, তিনি শ্রমিক বান্ধব। আবার ব্যবসায়ীরা যুক্তিসঙ্গত যা চান, প্রধানমন্ত্রী তাই করেন।
আজ বুধবার মতিঝিলের ফেডারেশন ভবনে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২১’ উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শন: শিল্প ও বাণিজ্য উন্নয়নে বাংলাদেশ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদ এমপি। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমান এমপি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এমপি, সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ ও এ কে আজাদ। এতে সমাপনী বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
ওই সেমিনারে প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদ এমপি বলেন, আজকের বাংলাদেশ যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, তার মূল ভিত্তি গড়ে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কৃষি, ব্যাংক-বিমা, বিদ্যুৎ- যোগাযোগ, সব বিষয়ে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করে গেছেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি। ষড়যন্ত্রকারীদের নির্মম হত্যাযজ্ঞে, বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের অকাল প্রয়াণে সদ্য জন্মানো রাষ্ট্রের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়েছে। কিন্তু ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে, উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেন, এখনও সরকারি যেসব পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়, সেগুলো জাতির পিতার দিয়ে যাওয়া নির্দেশনার আলোকেই বাস্তবায়িত হচ্ছে। উন্নয়ন দর্শন, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু এখনও বেঁচে আছেন বাংলাদেশের প্রতিটা অগ্রযাত্রায়।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা পরবর্তী বাস্তবতায় পাকিস্তানিদের ফেলে যাওয়া কলকারখানা জাতীয়করণ করেছেন। কিন্ত দেশ স্থিতিশীল হওয়ার পরে, সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে একটি ভারসাম্যমূলক অর্থনীতি গঠন করাই ছিলো বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শন।
স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন দেশ পুনর্গঠনে মনযোগ দিয়েছিলেন, যখন তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা আর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই এ দেশীয় অপশক্তির ঘাতকের বুলেট কেড়ে নেয় বাঙালির মুক্তির কাণ্ডারি শেখ মুজিবুর রহমানকে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, ভঙ্গুর অর্থনীতি, বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেই মাথাপিছু আয় ৯৩ ডলার থেকে ২৭১ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছিলেন। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন তাতেই প্রতিফলিত হয়েছিল তার গণমুখী আধুনিক দর্শন।