জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, প্রয়োজন ছাড়াই তেলের দাম বড়ানোয় মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে এই অযুহাতে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, এখন তো তেলের দাম কমছে কিন্তু তেলের দাম কমানে হচ্ছেনা কেন?
এর আগে তেলের দাম বিশ্বজবাজারে খুবই কম ছিলো তখনো তেলের দাম কমানো হয়নি। বলা হয় জ্বালানী তেলের চোরাচালান রোধে তেলের দাম বাড়ানো হয়, আসলে কখনোই জ্বালানী তেল চোরাচালান করা সম্ভব নয়। ট্রাংকার বা পাইপ লাইনের ছাড়া তেল পাচার করা অসম্ভব। কোন দেশেই জ্বালানী তেল চোরাচালান করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ভর্তুকি দিয়ে তেলের দাম প্রতি লিটার ৭টাকা রেখেছিলেন।
এখন সেই ডিজেলের দাম এখন ৮০ টাকা। জ্বালানী তেলের দাম বাড়ালে দেশের সব মানুষ কষ্ট পায়। প্রতিটি পণ্য ও সেবার দামও বেড়ে যায় জ্বালানী তেলের দাম বাড়ালে।
আজ বিকেলে ইনষ্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বর্ধিত সভার উদ্বোধনী বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, তেলের দাম বাড়ার সাথে সাথে গণ পরিবহন কোন ঘোষনা ছাড়াই ধর্মঘট শুরু করে। লাখ লাখ মানুষ পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়ে সড়কের মাঝে। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু কর্তা পরিবহন মালিকদের সাথে সভা করে পরিবহনের ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। সাথে সাথে ন্যাচারাল গ্যাসে চালিত বাস গুলোও ভাড়া বাড়িয়ে দেয়, অথচ গ্যাসের দাম বাড়েনি। আবার সরকার যতটুকু ভাড়া বাড়িয়েছে, শ্রমিকরা তারচেয়েও বেশি ভাড়া আদায় করে। যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজী না হলে তাদের পথে নামিয়ে দেয়া হয়।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, কোন ঘোষণা ছাড়াই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ নিজের অজান্তেই বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিল দিচ্ছে। পাশাপাশি নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কারো নিয়ন্ত্রণ আছে বলে মনে হচ্ছে না। কৃষক যে পণ্য ৫টাকা কেজিতে বিক্রি করে তা হাত ঘুরে রাজধানীতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়।
দেশের কৃষক পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। তিনি বলেন, দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্যই জাতীয় পার্টির রাজনীতি। তিনি বলেন, গেলো বছর অপরিকল্পিকত লকডাউন দেয়ার কারেন দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। বেকারত্বের সংখ্যা বেড়েছে অনেক গুন। যে দেশে তরুনদের সংখ্যা বেশি সেদেশ তত দ্রত উন্নতি করে। কিন্তু আমাদের দেশের বেকার তরুনদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই।
এসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাথে আর কোন প্রেম নেই আমাদের। আমাদের সাথে প্রেম করে আওয়ামী লীগ তিন বার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়েছে। এখন আমাদের ওপর নির্যাতন করছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের ওপর হামলা করছে। জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের নির্বাচনের মাঠ থেকে উঠিয়ে দিতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, মধ্যবিত্তের প্রধান বাহন হচ্ছে বাস সার্ভিস। সরকার সমন্বিত বাস সার্ভিস পরিচালনায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন আর কোন জোট নয়, জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে তিনশো আসনেই প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করবে।
সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসন বাবলা এমপি বলেছেন, প্রমান হয়েছে জাতীয় পার্টি ছাড়া আর কোন দলই দেশে সুশাসন দিতে পারে না। দেশের মানুষের আশা পূরণ করতেই জাতীয় পার্টির রাজনীতি। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই দলকে আরো শক্তিশালী করতে সবার প্রতি আহবান জানান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি।
এসময় বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, মীর আবদুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এড. রেজাউল ইসলাম ভুইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, জহিরুল ইসলাম জহির, মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. নুরুল আজহার শামীম, মনিরুল ইসলাম মিলন, প্রফেসর ড. গোলাম মোস্তফা, ভাইস চেয়ারম্যান মো: আরিফুর রহমান খান, যুগ্ম-মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু।
উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান এইচএম. শাহরিয়ার আসিফ, তারেক এ আদেল, আমির উদ্দিন আহেমদ ডালু, যুগ্ম-মহাসচিব ফকরুল আহসান শাহজাদা, মো: বেলাল হোসেন, একেএম আসরাফুজ্জামান খান, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য হেলাল উদ্দিন, নির্মল দাস, এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, হাজী মো: ফারুক, ইফতেকার আহসান হাসান, সুলতান মাহমুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: ইসহাক ভুইয়া, মিজানুর রহমান মিরু, গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম-সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সুজন দে, এড. সেরনিয়াবাদ সেকেন্দার আলী, আক্তার হোসেন দেওয়ান, এমএ সোবহান, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, শেখ মাসুকুর রহমান, জুবের আলম খান রবিন, শারফুদ্দিন আহমেদ শিপু, শাহজাহান কবির, মো: দ্বীন ইসলাম শেখ, মীর সামসুল আলম লিপটন, শেখ মোহাম্মদ শান্ত। এছাড়াও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের থানা ও ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।