জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে নির্বাচন কমিশনের ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত গরীবের ঘোড়া রোগ। রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধীতা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশনের ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়। তিনি ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছেন।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে পল্লীবন্ধু পরিষদ এর সাথে এক মতবিনিয়ম সভায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি আরো বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন হচ্ছে, আওয়ামী লীগের নির্বাচন কমিশন। কমিশনের প্রত্যেককে আমরা চিনি। এরা সবাই আওয়ামী লীগের শাসনামলে ভালো নিয়োগ, প্রমোশন এবং পোষ্টিং পেয়েছেন। এরা সবাই আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগি। নির্বাচন কমিশনের মত সংবিধানিক পদে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা ছাড়া তিনি নিয়োগ দিতে পারেন না। তাই, আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীরাই নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান সহ বিশ্বের অনেক দেশই ইভিএম এ নির্বাচন বন্ধ করেছে। ভারতেও সমালোচনা হচ্ছে ইভিএম-এ নির্বাচন নিয়ে। ভারতের কংগ্রেস ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে, তারা আর ইভিএম-এ ভোট করবে না।
সারা বিশ্বেই ইভিএম নিয়ে সমালোচনা ঝড় বইছে কিন্তু আমাদের নির্বাচন কমিশন প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে ইভিএম কিনতে উঠেপড়ে লেগেছে। তিনি বলেন, ইভিএম এর কোন দোষ নেই, কিন্তু যারা ইভিএম পরিচালনা করবে তাদের তো দোষ আছে। তাছাড়া, ইভিএম-এ অনেক সময় আঙ্গুলের ছাপ মেলে না। এতে ঝামেলা সৃষ্টি হয়, ভোট গ্রহণে বিলম্ব হয়। দেশের মানুষ এখনো ইভিএম-এ ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। তাছাড়া দেশের মানুষ মনে করে, ইভিএম হচ্ছে নিরবে ভোট কারচুপির মেশিন।
এসময় মুজিবুল হক চুন্নু আরো বলেন, সকল রাজনৈকি দলগুলোর মতামত নেয়া হলো। শাসকদল শুধু ইভএম-এ ভোট নেয়ার পক্ষে কথা বলেছে। সরকারের শরিক কিছু দলগুলো বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে ইভিএম চেয়েছে। আর, দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ ইভিএম-এ ভোট গ্রহণের বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। যদি রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের মতামনের গুরুত্ব না থকে তাহলে কেন আমাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করলেন? নির্বাচন কমিশনের আচরণ প্রমাণ করে তারা নিরপেক্ষ নয়।
এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের বিবেক ও দেশপ্রেম নেই। যখন ডলারের অভাবে জ¦ালানি তেল কিনতে পারে না দেশ, দ্রব্যমূল্য উর্ধগতির কারণে দেশের মানুষের হিমশিম অবস্থা। দেশের মানুষ বাজার করতে পারে না। অসুধ ও শিশুখাদ্য কিনতে পারছে না। এমন বাস্তবতায় প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ইভিএম মেশিন কেনার কোন যুক্তি নেই। সরকার মানুষের কষ্টের টাকায় ইভিএম না কিনে এক কোটি দুঃস্থ ও বেকারকে সহায়তা করতে পারে।
মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. নুরুল আজহারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আরিফুর রহমান খান, এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হুমায়ুন খান, দফতর সম্পাদক-২ এম এ রাজ্জাক খান, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোঃ গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় জিয়াউর রহমান বিপুল, ফারুক শেঠ, প্রিন্সিপাল মোস্তফা চৌধুরী, মোঃ জয়নাল আবেদীন, ইঞ্জিনিয়ার তসলিম উদ্দিন।