বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপথ আন্দোলনে থাকা দলগুলোকে আগামী ১২ ও ১৩ নভেম্বর (রবি ও সোমবার) ৪৮ ঘণ্টা দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ (বীর বিক্রম)।
আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপির ডাকা এই অবরোধ কর্মসূচি পালনের জন্য দলটির নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
সেইসঙ্গে আগামীকাল ১০ নভেম্বর শুক্রবার বাদ জুমা ২৮ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত যেসব নেতাকর্মী নিহত ও আহত হয়েছেন এবং আন্দোলনরত যেসব গার্মেন্টস শ্রমিক নিহত হয়েছেন তাদের জন্য দোয়া মাহফিলের আহ্বান জানান এলডিপির প্রেসিডেন্ট।
বিবৃতিতে কর্নেল অলি বলেন, বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছে। ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারকে নির্বাসিত করেছে। জনগণকে জানোয়ার হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। দেশের অর্থনীতিকে ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে। বিরোধী দলের লাখ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, গায়েবি মামলা হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত হচ্ছে। টাকা পাচার অব্যাহত রয়েছে এবং দুর্নীতির উচ্চ শিখরে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, বিএনপির সব প্রবীণ নেতাদের জেলে আটকিয়ে রেখেছে। অনেকের মিথ্যা মামলায় সাজাও দিয়েছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে এই সকল বিরোধী দলের নেতারা জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে লিপ্ত। জনগণের মানবাধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার, ন্যায়বিচারের অধিকার এবং সর্বোপরি ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চেষ্টা করছে। মানুষকে এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে চেষ্টা করছে। এটাই তাদের একমাত্র অপরাধ। নেতারা শুধু তাদের স্বার্থ হাসিল করার জন্যই এই দায়িত্ব গ্রহণ করেনি। তারা ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির জন্য, দেশকে প্রকৃত অর্থে স্বেচ্ছাচারমুক্ত করার একটা উদ্যোগ নিয়েছে।
দেশের জনগণকে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করতে হবে উল্লেখ করে এলডিপির প্রেসিডেন্ট বলেন, আজ বেগম খালেদা জিয়া মুমূর্ষু অবস্থায় আছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মিথ্যা মামলায় বিদেশে নির্বাসিত। তাহলে প্রশ্ন হলো দেশকে এইভাবে এক দলীয় শাসনের মাধ্যমে ধ্বংস হয়ে যাবে নাকি দেশের জনগণকে গাঁ ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়াতে হবে। দেশকে রক্ষার কাজে নিজকে নিয়োজিত করতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দেশকে নিরাপদ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের অদক্ষতা ও অব্যবস্থার কারণে নিত্যপণ্যের মূল্যের ক্রমবধ্যমান বৃদ্ধির কারণে কৃষক, শ্রমিকসহ শতকরা ৮০ ভাগ গরিব মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়েছে। তারা অস্থিরতায় ভুগছে। অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। দয়া করে তাদের কথা ভাবুন। মেহেরবানি করে বসে থাকবেন না, একবারের জন্য হলেও দেশের ব্যাপারে চিন্তা করুন।
‘যদি আপনারা মনে করেন আমরা সঠিক পথে আছি। তাহলে মেহেরবানি করে কিছু দিনের জন্য গাড়ি বের করবেন না। রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করুন। প্রয়োজনবোধ করলে আমাদের কর্মসূচিতে যোগদান করুন। স্বাধীনতা হুমকির মুখে, চুপচাপ ঘরে বসে থাকার আর সময় নেই। আল্লাহর নিকট আমাদের সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। একদিন না একদিন সবাইকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। সরকারের ভাষায় জানোয়ারের মতো মৃত্যুবরণ করে কি লাভ,’ যোগ করেন কর্নেল অলি।