কারাগারে বিএনপির নেতাকর্মীদের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গত কয়েক দিনে কারাগারে ১০ জনের অধিক বিএনপির নেতাকর্মী মারা গেছেন। কারাগারে তারা চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তাদের হাত ও পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে কারাগারের ভিতরের হাসপাতালে ফেলে রাখা হয়েছে।
দ্বাতশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রধান নেতা জি এম কাদের কত কথা বললেন। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন করা যাবে না। তারা গতবার রাত্রি বেলায় নির্বাচন করেছেন। কত কথা বললেন। তারপর শুধুমাত্র নিজের স্ত্রীর জন্য গোটা দলকে বিক্রি করে দিলেন! সেটা তার দলের লোকেরা প্রতিদিন স্লোগান দিচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ পরশু দিন যা বলবে আজকে তার উল্টো মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখনো অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী কি চিৎকার করে বলছেন যে, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। অমুক দেশ এটা পছন্দ না করলেও তারা আমাকে এই করতে চায়, সেই করতে চায়। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন, এখনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে। প্রতিনিয়তই তিনি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আবিষ্কার করছেন।
‘কিন্তু ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনিও ছাত্র নেতা ছিলেন। আপনার নেত্রী বলছিলেন, এরশাদের অধীনে নির্বাচন করলে তারা বেইমান হবেন। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আপনার নেত্রী গেলেন! তাহলে দেশের তরুণ সমাজ আওয়ামী লীগ করবে কেনো? যারা ব্যক্তিগত স্বার্থে দল (জাতীয় পার্টি) বিক্রি করে দেয়, আর যদি আওয়ামী লীগ করতে হয় তাহলে নিজেকে আগে মুনাফিক হতে হবে। যে মুনাফিক হতে পারে সেই আওয়ামী লীগ করবে। আর মিথ্যাবাদী হলে সে আওয়ামী লীগ করতে পারে।’
রিজভী বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার (ফলকার টুর্ক) যে বিবৃতি দিয়েছেন। আর আমাদের আইনমন্ত্রী (আনিসুল হক) একেবারে প্রধানমন্ত্রীর একজন খাস মোসাহেব। আর প্রতিদিন বিএনপি কত নির্যাতিত হচ্ছেন, এটা না শুনে তিনি ঘুমাতে যান না। সেই আনিসুল হক সাহেব বলছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের বিবৃতিতে তথ্যের ঘাটতি আছে। এখানে বিচার ও আদালত নিজ গতিতে চলে। আইনমন্ত্রী সাহেব? এই যে বললাম, উনি মিথ্যা কথা বলতে পারেন বলেই তো আওয়ামী লীগের মন্ত্রী। তিনি সত্য কথা বললে তো আর আওয়ামী লীগ করতেন না। আর সরকারের সঙ্গে কিছু বিষয়ে দ্বিমত থাকার কারণে দেশের প্রধান বিচারপতি নিজের জীবন নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এরপরও আইনমন্ত্রী সাহেব বলবেন, আইন ও বিচার ঠিক মত চলে?
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেওয়ার যে মানবিক অধিকার সেটা আজকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রুহুল কবির রিজভী।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা দলের আহ্বায়ক রুমা আক্তার, সদস্য সচিব নাসিমা আক্তার কেয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।