ফেনসিডিলে এতই আসক্ত ছিলেন তিনি যে, মাদক কিনে টাকা না দিলে গাছের সঙ্গেও তাকে বেঁধে রাখার ঘটনা ঘটে। মুরাদের বিষয়ে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) শাখা ছাত্রদলের ১৯৯৬-৯৮ কমিটির প্রচার সম্পাদক ছিলেন সদ্য সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান। সেই সময় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন মুরাদ, যা খুশি তাই করতেন। মদ্যপ অবস্থায় দেখা গিয়েছিল তাকে বেশ কয়েকবার। ফেনসিডিলের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতেন তিনি।
আবু ওয়াহাব আকন্দ বলেন, ‘মুরাদ হাসান ময়মনসিংহে ছাত্রদল করার সময় তিনি নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বাগমারা এলাকায় তাকে মদ্যপ অবস্থায় দেখা যেত। ফেনসিডিল সেবন করতেন, যা সবারই জানা ছিল। তিনি যেখান থেকে ফেনসিডিল নিতেন, একদিন সেখানে গেলে ফেনসিডিল কেনার টাকা না দেওয়ায় (পয়সার অভাবে) তাকে বিক্রেতারা হাত-পা বেঁধে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখেছিলেন।’
বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই আমলেই সুবিধাভোগী নেতা ও ক্যাডার ছিলেন মুরাদ। এ তথ্য দিয়েছেন ’৯৮ সালে মমেক ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও মমেক বিশ্ববিদ্যালয়ে মুরাদের এক ব্যাচ সিনিয়র ডা. মো. ইসহাক।
সাবেক এ ছাত্রদল নেতা বলেন, ১৯৯৩ সালে এম-৩০ ব্যাচে মুরাদ হাসান এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৯৬ সালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ শাখা ছাত্রদলের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। মুরাদ হাসান এতে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে ৫ থেকে ৬ মাস দায়িত্ব পালন করেন। এর পর ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ছাত্রদল থেকে পদত্যাগ করে ছাত্রলীগে যোগদান করেন তিনি।
২০০০ সালে মমেক ছাত্রলীগের সভাপতিও হন ডা. মুরাদ। ছাত্রদলের এমন একটি পদ থেকে পল্টি নিয়ে কীভাবে ছাত্রলীগ নেতা হয়ে গেলেন মুরাদ?
এ বিষয়ে মমেক ২৯তম ব্যাচের ছাত্র ডা. বিজয় কুমার পাল বলেন, ডা. মুরাদের পিতা ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। মুরাদকে পদে আনতে চারদিক থেকে আমাদের ওপর চাপ ছিল। সে ছাত্রদল নেতা জানা সত্ত্বেও অনেকটা বাধ্য হয়েই আমরা তাকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বানিয়েছি।