স্বাধীনতাযুদ্ধে গঠিত জেড ফোর্সের অন্যতম সেনা কর্মকর্তা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, জেড ফোর্সের সমরনায়ক সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে চার জন বিএনপিতে ছিলেন। একজন কর্নেল আকবর হোসেন তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। অন্য দুই জন কর্নেল অলি আহমদ ও মেজর শমসের মবিন চৌধুরী-তারা অন্য দলে চলে গেছেন। আমি একমাত্র কোনোক্রমে অনেক অস্বস্তি নিয়ে এখনো টিকে আছি।
বুধবার (৭জুলাই) বিকেলে এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মাননা কমিটির উদ্যোগে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্স গঠন উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
মেজর হাফিজ বলেন, জিয়াউর রহমানকে আমরা সবাই একজন মহান রাষ্ট্রপতি রুপে জানি, তিনি যে কত কৌশলী সমরনায়ক ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সামরিক অঙ্গনে তিনি যে একজন তেজদীপ্ত কমান্ডার ছিলেন। আজকে বিনা ভোটের এই সরকারের কারণে ক্রমাগতভাবে সেই ইতিহাস বিকৃত হয়েছে। আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি আমার কমান্ডার শহীদ জিয়াউর রহমানকে।
তিনি বলেন, জেড ফোর্স ছিলো মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বিগ্রেড। কিন্তু এটি ছিলো একটি পূর্ণাঙ্গ বিগ্রেড। অন্য দুটি যে বিগ্রেড ছিলো কে ফোর্স এবং এস ফোর্স সেখানে দুটি করে পদাতিক ব্যাটেলিয়ন ছিলো। কিন্তু জেড ফোর্সে তিনটি পদাতিক ব্যাটেলিয়ন ছিলো। এই জেড ফোর্স ছিলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শক্তিশালী একটি বিগ্রেড যারা রণাঙ্গনে অনেক গৌরব দীপ্ত ভূমিকা রেখেছে। জেড ফোর্স স্বাধীনতা যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সাহসীকতা পদক অর্জন করেছে এই ফোর্স এবং আত্মদানে ও শহীদদের সংখ্যাও সবচাইতে বেশি এই জেড ফোর্সে।
তিনি বলেন, রৌমারী একটি জায়গা এটি সবসময় স্বাধীন রেখেছে জেড ফোর্স। এখানে বারং বার আক্রমণ চালিয়েছে পাকিস্তান বাহিনী নৌ পথে, কোদালকাঠিতে যুদ্ধে হয়েছে কয়েকবার। পরে তারা রণভঙ্গ দেয়। এই রৌমারী সবসময় স্বাধীন ছিলো। রৌমারীতে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে আমি গিয়েছিলাম, আমাদের অন্যান্য কমান্ডাররা গিয়েছেন। সেখানে আমরা ডাক চালু করেছি, একটি সিভিল প্রশাসনও চালু করেছিলাম। এই রৌমারী ৯টি মাস মুক্ত রাখার কৃতিত্ব দাবি করতে পারে জেড ফোর্স।
বিএনপির এই নেতা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমরা যারা বিএনপি করি আমরা নিজেরাই জানি না। সিলেটে কোথায় যুদ্ধ হয়েছে আমি সিলেটের নেতাদেরকে জিজ্ঞাসা করেছি তারাও বলতে পারেনি। এই হলো বাস্তবতা। যখন আমরা ক্ষমতায় থাকি তখন আমরা জীবিত নেতাদের তোষামোদে ব্যস্ত থাকি। যখন ক্ষমতায় থাকি তখন জেড ফোর্সের নামও শোনা যায় না। এখন কিছুটা শুনতে পাচ্ছি সেজন্য দলের স্বাধীনতা সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটিতে ধন্যবাদ জানাতে চাই।
দলের স্বাধীনতা সূবর্ণজয়ন্তী মুক্তিযোদ্ধা সন্মাননা কমিটির আহ্বায়ক ব্যারিস্টার অবসরপ্রাপ্ত মেজর শাহজাহান ওমর বীর উত্তমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল জয়নাল আবেদীনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালাম, কল্যাণপার্টির চেয়ারম্যান অবসপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান প্র্রমূখ বক্তব্য রাখেন।