গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, অনৈতিক নানা অপকর্মের জন্য দেশের ক্ষতি হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, সোচ্চার হতে হবে। দেশে নৈতিকতা ফিরিয়ে আনতে হবে। অনৈতিক অপকর্ম থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।
দলটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আমসাআ আমিনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণ-অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর, শিল্পী কামরুন্নেসা খান নাসরিন, লে. কর্ণেল (অব.) ফেরদৌস আজিজসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিরা বক্তব্য রাখেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার নীতিহীন। এরা গায়ের জোরে ডাকাতি করে ক্ষমতা নিয়েছে। বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় যেকোনো লোককে জিজ্ঞাসা করবেন তারা এই কথা (সরকার নীতিহীন) বলবে। তারা বলেছিল ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াবে যদি ক্ষমতায় যায়। এখন চালসহ সমস্ত জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। এই দাম বেড়ে যাওয়া কি যৌক্তিক?
তিনি আরো বলেন, টিসিবির ট্রাকের পেছনে লোকেরা লাইন দিচ্ছে। এটা কি দেখতে ভালো লাগে? প্রতি ট্রাক চার শ জনের জিনিসপত্র দেবার পরে আরো চার শ জন দাঁড়িয়ে থাকে। ট্রাক যখন চলে তার পেছনে পেছনে মানুষ দৌঁড়াতে থাকে। তাদের লবণ, আটা, তেল, চাল, পেঁয়াজ দরকার। কত বড় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছিল আপনারা এর আগে দেখেননি? ‘৭৪ এ দুর্ভিক্ষ আমরা দেখেছিলাম আর এতদিন পরে সেই একই দল ক্ষমতায় থাকবার পরে একই দৃশ্য আমরা দেখছি।
তিনি বলেন, ‘আজকে পত্রিকা খুলে দেখলাম, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দ্রব্যমূল্য যা-ই বেড়েছে জনগণের সহনীয় পর্যায় আছে। উনি (প্রধানমন্ত্রী) যা বলেছেন ওটা ঠিক নয়। মানুষের সহ্যের মধ্যে নাই এই দাম। খোদ প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন, জিনিসের দাম বেড়েছে-এটা মানুষের সহ্যের মধ্যে আছে। তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? এই নৈতিক সমাজের প্রধান আমিন ভাই একসময় আওয়ামী লীগ করতেন, এই প্রধানমন্ত্রীর এই সভানেত্রীর উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ওই রাজনৈতিক দল ছেড়ে দিয়ে এখন নতুন দল করছেন। কেন? আওয়ামী লীগ ভালো দল নয় বলেই তো।
বর্তমান সরকারের পতনের পর একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের রেখে প্রশাসনসহ সব কিছু পাল্টাতে একটি অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠনের কথাও তুলে ধরেন মান্না। তিনি বলেন, আমরা বলছি, এই সরকার চলে গেলে তারপরে কোনো সরকার আসবে? সাথে সাথে তো নির্বাচন আসবে না। ওই নির্বাচন করবার জন্য তো সময় লাগবে এবং সেই নির্বাচনটা করবে কিভাবে?
তিনি আরো বলেন, এই ডিসি, এসপি, ওসি নির্বাচনে থাকলে বিরোধী দল নির্বাচন করতে পারবে? এই পুলিশ ভোট ডাকাতি করেছে, এই আর্মি চুপচাপ বসে দেখেছে, বিজিবি-র্যাব দেখেছে না? তারা নৈতিকভাবে এবং মৌনভাবে সমর্থন দিয়েছে না? এখন আমরা বলছি, পুরো প্রশাসন বদলিয়ে দিতে হবে। এটা বদলে দেবার জন্য সময় লাগবে। একদিনে পারবেন না। কেয়ার টেকার সরকার যদি বলেন, আমাদের সংবিধান বলে এই সরকার তিনমাসের জন্য। তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে চলে যাবে, তারা অন্য কোনো কাজকর্ম করতে পারবে না। আমরা সেই সরকার চাই যে সরকার একটা নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারবে যাতে আমরা সবাই ভোট দিতে পারে।