ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, সারা পৃথিবীতে গণহত্যার নির্মমতার ইতিহাসে এযাবৎকালের একাত্তরের ২৫মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীর পৈশাচিকতা ছিলো নজিরবিহীন। এই দিনটি বাঙালির জন্য বেদনা ও স্মৃতিকাতরতার দিন। অনুরূপভাবে গ্রেফতারের আগে বেতার বার্তায় পাঠানো ২৬ শে মার্চে প্রচারিত বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন। এরই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এদেশেীয় কিছু দোসর ছাড়া গোটা জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলো
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত ২৫ শে মার্চের গণহত্যা বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: আফজাল হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক ।
মন্ত্রী বলেন, ৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার ঘোষণার ধারাবাহিকতায় ৬৮ সালের পর থেকেই সরাসরি স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জয় বাংলা ঘোষণা, বাংলাদেশ নামকরণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় পতাকা উত্তোলন এবং জয় বাংলা বাহিনীর প্যারেড অনানুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশ ঘোষণারই বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেন সে সময়কার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজপথের লড়াকু সৈনিক জনাব মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, ৬৮ সালের পর পুরো সময়টাই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমরা সশস্ত্র লড়াই এর মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের কথাই বলেছি।
তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু জীবনের সুদীর্ঘ পথযাত্রা অধ্যয়ন না করলে বঙ্গবন্ধুর বিশালত্ব জানা যাবে না। তিনি পাঠ্য বইয়ের বাইরে বঙ্গবন্ধুকে অধ্যয়ন করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুকে জানার জন্য, জাতি রাষ্ট্রের ইতিহাস জানার জন্য শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতি এদেশের মানুষের ভালবাসা, তার নেতৃত্বের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বর্ণনা করে বলেন, তিনি মানুষের কাছে ছিলেন অতি আপন জন। তিনি বলেন, আমার মা যুদ্ধ থেকে ফিরে আসবো না জেনেও বঙ্গবন্ধুকে ভালবেসে আমাকে যুদ্ধে পাঠিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্য নয় মাস রোজা রেখেছেন। আমার মায়ের মতো কোটি মা তার সন্তানদের হাসি মুখে যুদ্ধে পাঠিয়েছে। এদেশের মায়েরা মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে খাবার তুলে দিয়েছে। থাকতে দিয়েছেন। অথচ তাদের অনেকেই বঙ্গবন্ধুকে দেখননি হয়তো।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বঙ্গবন্ধুর ২৩ বছরের সংগ্রামের ও ত্যাগের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা বাংলাদেশ পেতাম না। তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সকলকে ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজ্জাদ জহীর
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিএসসিএল চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ. ডাক অধিদপ্তরের মহপরিচালক মো: সিরাজ উদ্দিন, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান টেলিটক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: সাহাব উদ্দিনসহ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও এর অধীন সংস্থাসমূহের কর্মকর্তা কর্মচারিগণ অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন। এছাড়াও ডাক অধিদপ্তর ও বিটিসিএল পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ অনলাইনে আলোচনা সভায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ওপর আয়োজিত রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।