হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রিয় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। ২৫ এপ্রিল ২০২১ রবিবার রাত ১১টায় হেফাজতের আমীর আল্লামা জুয়ায়েদ বাবু নগরী ফেসবুক লাইভে এসে এ ঘোষণা দিয়ে বলেন “দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক সংগঠন, দ্বীনি সংগঠন, ঈমান আক্বিদার সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের পরামর্শক্রমে কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হল।
বাবুনগরী আরও বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে পরামর্শক্রমে কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। ইনশাল্লাহ, আগামীতে আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে আবার হেফাজতে ইসলামের কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে, হাটহাজারী থেকে স্থানীয় হেফাজতনেতা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রবিবার রাত নয়টার পর থেকে হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার আশেপাশে ও প্রবেশপথে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে। বিভিন্ন বাহিনীর চট্টগ্রাম জোটের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সেখানে রয়েছে।
স্থানীয় ধারণা করছেন, হাটহাজারী মাদ্রাসায় অভিযান চালানো হবে, এমন কথাবার্তা এলাকায় ছড়িয়েছে।
মাদ্রাসার বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি প্রসঙ্গে একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, হেফাজতে ইসলামের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীকে গ্রেফতারের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তবে হেফাজতের কমিটি ভেঙে দেওয়ার কারণে গ্রেফতার অভিযান আর হচ্ছে না।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তা আরও জানান, হাটহাজারী মাদ্রাসার চারদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম চালানো হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির ও নূর হোসাইন কাসেমীকে মহাসচিব করে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করে হেফাজতে ইসলাম। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আল্লামা আহমদ শফীর ইন্তেকালের কারণে নতুন এ কমিটি করেছিলো হেফাজত। এরপর ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী মারা গেলে নায়েবে আমির মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদীকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব দিয়েছিলো হেফাজত। আজ ২৫ এপ্রিল রাতে সংগঠনটির দ্বিতীয় এই কমিটি বিলুপ্ত করলেন আমির বাবুনগরী।
এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমনের বিরোধিতা করে দেওয়া হেফাজতের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত মার্চের ২৫, ২৬ ও ২৭ তারিখ দেশজুড়ে যে সহিংস ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৭ জন মানুষের প্রাণহানি হয়। পরে গত ১১ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন মামলায় হেফাজতের নেতাদের গ্রেফতার শুরু করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। রবিবার পর্যন্ত হেফাজতের কেন্দ্রীয় অন্তত ১৬ জননেতা ও সারাদেশে অন্তত দুই শতাধিক নেতা, কর্মী ও সমর্থক গ্রেফতার হয়েছে।