বেশ কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর সোমবার বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। তবে তিনি দেশ ত্যাগ করতে চাননি বলে এনডিটিভিকে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। সাক্ষাৎকারে জয় বলেছেন, ‘তিনি দেশেই থাকতে চেয়েছিলেন। কোনোভাবেই দেশ ত্যাগ করার কোনো ইচ্ছা তার ছিল না। আমরা সার্বক্ষণিক তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে সতর্ক ছিলাম, যার ফলে পরিবারের সবাই তাকে দেশ ত্যাগের অনুরোধ করলে তিনি দেশ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।’
এনডিটিভির সাংবাদিক মারয়া শাকিল টেলিফোনের মাধ্যমে জয়ের একটি সাক্ষাৎকার নেন। সাক্ষাৎকারে জয় আরও বলেন, ‘আমি সকালে মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। বাংলাদেশে এমন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনি অবগত আছেন। এ পরিস্থিতিতেও তিনি শক্ত ছিলেন। তবে তিনি বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। যা ঘটেছে তাতে তার হৃদয় ভেঙ্গেছে, কেননা তিনি শেষ পনের বছর যাবৎ বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন।
বাংলাদেশকে তিনি সহিংসতা থেকে নিরাপদে রেখেছেন। এছাড়া সংখ্যালঘুরা তার সময়ে নিরাপদে ছিলেন।’
টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসার মাত্র সাত মাসের মাথায় পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেছে হাসিনা। এ বছরের জানুয়ারিতে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসেছিলেন তিনি। সোমবার ৭৬ বছরের হাসিনাকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার ভারত পৌঁছে দেয়। তিনি সেখান থেকে লন্ডনে যাওয়ার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে যুক্তরাজ্য এখনও রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানায়নি। পরবর্তীতে হাসিনা অন্য কোনো দেশে যাওয়ার কথা ভাবছেন কিনা সে বিষয়ে এখনও তার সঙ্গে কোনো আলাপ হয়নি বলে জানিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
গত ১৫ বছরে বিরোধী দলকে দমন-পীড়ন করেছেন হাসিনা। কেড়ে নেয়া হয় বাক স্বাধীনতা। সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে কয়েক শ’ ছাত্রজনতা নিহত হন। এর পরই তিনি পদত্যাগ করেন এবং দেশত্যাগে বাধ্য হন। জুলাইয়ের শুরু থেকেই কোটা সংস্কারের লক্ষ্যে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা সংস্কারের দাবি জানায়। পরে পুলিশ এবং সরকারে ছাত্র সংগঠনের হামলায় নিহত হন তিন শতাধিক ছাত্রজনতা। এতে হাসিনার পদত্যাগ দাবি করে শিক্ষার্থীরা।