জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সব ক্রান্তিকালে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব সহযোদ্ধা ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পিরোজপুর-এর শহীদ আব্দুর রাজ্জাক-সাইফ মিজান স্মৃতি সভা কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা, সেলাই মেশিন ও আর্থিক অনুদান বিতরণ অনুষ্ঠানে রাজধানীর সচিবালয় থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। জেলা প্রশাসন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও জাতীয় মহিলা সংস্থা, পিরোজপুর এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে বিশেষ করে ছয়দফা ঘোষণার সিন্ধান্ত নেয়ার সময় বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা দিয়ে বলেছিলেন তুমি যা ভালো মনে করো, সেটাই করো। বঙ্গমাতার দৃঢ় মানসিকতায় বঙ্গবন্ধু অনেক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনের শ্রেষ্ঠ ভাষণ তথা ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের প্রেরণায় ছিলেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তাঁর কাছে থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বতস্ফূর্তভাবে বঙ্গবন্ধু বিশ্বের সেই বিস্ময়কর ভাষণ দিয়েছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে নারী জাগরণের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচনা করেছেন বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তিনি মহীয়সী নারী, বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী, সহযোদ্ধা, সহকর্মী, অনুপ্রেরণাদায়িনী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জননী। অতি সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে কখনোই কোনরকম চাপে বিচ্যুত হননি।
মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু হতে প্রেরণা দিয়েছেন, সকল শক্তি-সাহস জুগিয়েছেন বঙ্গমাতা। বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে বলতেন দেশের জন্য তোমার জন্ম হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখে গেছেন রেণু (বঙ্গমাতা) পাশে না থাকলে তিনি বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠতে পারতেন না। একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য, একটি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার জন্য একজন মহীয়সী নারী কিভাবে প্রেরণা যোগাতে পারে, সহায়তা করতে পারে তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তাই আজকের কন্যা শিশুদের বঙ্গমাতার মতো আদর্শ নারী হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। বঙ্গমাতা আমাদের জন্য আদর্শ। তিনি আজীবন রাজনীতির জন্য, দেশের জন্য, মানুষের কল্যাণে, নির্যাতিতদের কল্যাণে ভূমিকা রেখেছেন।
শ ম রেজাউল করিম আরও যোগ করেন, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা আজ বিশ্বে নারী জাগরণের মডেল, তিনি উন্নয়নে বিশ্বের রোল মডেল, তিনি মানব কল্যাণে মানবতার জননী হিসেবে সমাদৃত। তাঁর নেতৃত্বে উন্নয়নে সমৃদ্ধ, আধুনিক, সমতাভিত্তিক, জেন্ডার বৈষম্যহীন বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিউর রহমান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কানাই লাল বিশ্বাস। সিভিল সার্জন, পিরোজপুর ডা. মো. হাসনাত ইউসুফ জাকী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা, পিরোজপুর-এর যুগ্ম পরিচালক মো. আব্দুল কাদের, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক চান শিকদার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গৌতম নারায়ণ রায় চৌধুরী, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অনিরুজ্জামান অনিক প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।